চোখের পাতায় দুই ধরনের গ্রন্থি থাকে। এক ধরনের থাকে যেটি গ্রন্থি ঘাম নিঃসৃত করে এবং অন্যগুলো তৈলাক্ত রস নিঃসৃত করে। কোনো কারণে এই গ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে ঘাম ও তৈলাক্ত রস সেবাম গ্রন্থির অভ্যন্তরে আটকে যায়।
এতে গ্রন্থিতে ইনফেকশন বা প্রদাহের সৃষ্টি হয়। ঘর্মগ্রন্থিগুলোয় কোনো কারণে সংক্রমণ হলে পাপড়ির থলি বা ল্যাশ ফলিকুলে পুঁজ জমা হয়ে ফুলে যায়। এটি লালচে বর্ণ ধারণ করে ও ব্যথা হয়। এটিই অঞ্জনি।
কারণ
ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, হরমোনের প্রভাব, শুষ্ক ত্বক, চোখের স্ট্রেস যেমন রাত জাগা বা দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে কাজ করা, চোখে বারবার হাত দিয়ে রগড়ানো বা চুলকানো ইত্যাদি কারণে অঞ্জনির ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রসাধনীর কারণেও ঝুঁকি বাড়তে পারে।
উপসর্গ
- পাপড়ির গোড়ায় ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো দেখা দেয়।
- ব্যথা থাকে ও স্পর্শ করলে ব্যথা অনুভূত হয়।
- অনেক সময় লালচে ভাব পরিলক্ষিত হয়।
- পাপড়ির গোড়ায় ক্রাস্ট বা শক্ত ময়লা বিশেষ জমতে পারে।
- অঞ্জনির মতো আরও একটি সমস্যা হলো কেলাজিয়ন। এটি হলো মেবোমিয়ান গ্রন্থির প্রদাহ। এটি কোনো সংক্রমণ নয়। তাই এতে কোনো ব্যথা থাকে না। অঞ্জনি এক থেকে দুই সপ্তাহে সেরে গেলেও কেলাজিয়ন অনেক সময় কয়েক মাস বা তারও বেশি সময় একই রকম থাকতে দেখা যায়।
চিকিৎসা
- হট কমপ্রেসন বা গরম সেক দিলে অনেক সময় উপকার পাওয়া যায়।
- অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ডোজ মেনে ব্যবহার করতে হবে।
- প্রয়োজনে ড্রপের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
করণীয়
- চোখের পাতার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে যাদের খুশকির সমস্যা আছে, তাদের চোখের পাতা বেবি শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। আর মাথায় খুশকি থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে চিপে চোখের পাতার ওপর কয়েক মিনিট ধরে রাখতে হবে।
- দৃষ্টির সমস্যা থাকলে পরীক্ষা করে প্রয়োজনে চশমা ব্যবহার করতে হবে।
- রাত জেগে কাজ করার অভ্যাস ছাড়তে হবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :