“২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার পরেও এ বছর বইয়ের দাম বেশি মনে হচ্ছে। যেহেতু সন্তানদের বই। তাই কষ্ট হলেও উপায় নেই। বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। তাই যেমন চাহিদার তুলনায় নিত্যপণ্য কম কিনতে হয়, ঠিক তেমনই বইয়ের দাম বেশি হওয়ায় তাদের (সন্তানদের) চাহিদার তুলনায় কম বই কিনে দিতে হচ্ছে।” এই কথাগুলো বলেন বইমেলায় আসা কাজী রিয়াদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ছিল বইমেলার তৃতীয় দিন এবং শিশু প্রহরের দ্বিতীয় দিন। এদিন রিয়াদুল ইসলাম এসেছেন তার ছেলেকে নিয়ে শিশু প্রহরে ঘুরতে এবং বই কিনতে। তার সঙ্গে আলাপের একপর্যায়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শুধু রিয়াদুল ইসলাম নন, তার মতো অনেকেই এমন কথা বলেছেন। তারা বলছেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর বইয়ের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।”
অন্যদিকে প্রকাশনী সংশ্লিষ্টদেরও কথা একই রকম। অভিভাবকের এমন মন্তব্যে প্রকাশনী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, “চলতি বছর কাগজের দামসহ বই প্রস্তুত করতে যুক্ত হয়েছে বাড়তি খরচ। ফলে বেড়েছে বইয়ের দাম।”
অভিভাবক জুয়েল বলেন, “শিশুরা বইমেলায় এসে অনেক খুশি। কয়েকটি বইও কিনে দিয়েছি। তবে তার ইচ্ছে আরও বই কিনবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বইয়ের দাম ডাবল হয়েছে। সবকিছুর দামই যেহেতু বেশি, সেহেতু বইয়ের দামটাও থেমে নেই। তবে বইমেলায় যেহেতু বই কিনতেই মানুষ আসে, সেক্ষেত্রে কষ্ট হলেও বেশি দাম দিয়ে কিনলেও হয়তো সমস্যায় পড়বেন না।”
আরো প্রকাশন নামের একটি প্রকাশনীর স্টলের দায়িত্বে থাকা নীরব হোসেন বলেন, “এ বছর মোটামুটি অভিভাবকরা আসছেন। কিন্তু সে তুলনায় বিক্রির পরিমাণ অনেক কম। কারণ গত বছরের তুলনায় কাগজের দাম বাড়ায় বইয়ের দামও বেড়েছে। গত বছর যে বই আমরা বিক্রি করেছি ৩৫০ টাকায়, এ বছর সেই বইয়ের দাম ৪৭০ থেকে ৫০০ টাকা হয়েছে। কাজেই অভিভাবকরা চাইলেও বই কিনতে পারছেন না।”
লেখক ও প্রিয় প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আতিক রহমান বলেন, “কাগজের দাম আগে ছিল এক হাজর ৯০০ টাকা রিম। এখন কিনতে খরচ করতে হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার টাকা রিম। কাগজের পাশাপাশি বোর্ড বাধাই, প্লেড সেকশনসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। যে কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর বইয়ের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বইয়ের দাম বেড়ে যাওয়া অভিভাবকেরাও অভিযোগ করছেন। তারপরেও যতটুকু সম্ভব আমরা কমিয়ে দাম রাখছি। আমরা আশা করছি শুরুর দিকে বই বিক্রি না হলেও, শেষের দিকে হয়তো অনেকেই কিনবেন।”
আপনার মতামত লিখুন :