গরমে তালের শাঁস খাওয়া কেন উপকারী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
গরমে তালের শাঁস খাওয়া কেন উপকারী
ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মের জনপ্রিয় ফল হলো তাল। গ্রামাঞ্চলে তালগাছ খুবই পরিচিত। এর নানা অংশ নানাভাবে ব্যবহার করা হয়। তালের রস, তালের পিঠা, তালের বড়া, তালের শাঁস ইত্যাদি খাদ্য সংস্কৃতির একটি অংশ। এর মধ্যে তালের শাঁস বা কচি তালশাঁস  উপকারী খাবার। গরমকালে এই শাঁস শুধু শরীর ঠাণ্ডা রাখেই না, বরং এটি নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর।

প্রাকৃতিক ঠাণ্ডা রাখে
তালের শাঁস খেলে শরীর ভেতর থেকে ঠাণ্ডা থাকে। গরমের দিনে এটি শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপ কমাতে সাহায্য করে। হিট স্ট্রোক, গরম লাগা বা ঘামের পরিণতিতে শরীরের পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে।

ডিহাইড্রেশন রোধে কার্যকর
তালের শাঁসে উচ্চমাত্রায় পানি ও ইলেকট্রোলাইট থাকে, যা শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। ঘাম ও গরমে হারিয়ে যাওয়া লবণ, পটাশিয়াম ও মিনারেল পুনরায় শরীরে সরবরাহ করে তালের শাঁস। গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন একবার তালের শাঁস খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

হজমে সহায়তা করে
তালের শাঁসে থাকা প্রাকৃতিক আঁশ বা ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এটি অন্ত্রে গ্যাস, বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে। নিয়মিত তালের শাঁস খেলে পেট পরিষ্কার থাকে, ফলে হজমের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।

ত্বকের যত্নে উপকারী
তালের শাঁস ত্বকের যত্নেও ব্যবহার করা যায়। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন C ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে। গরমে রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকে তালের শাঁস পেস্ট করে লাগালে তা ঠাণ্ডা প্রভাব সৃষ্টি করে এবং জ্বালাভাব কমায়। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।

প্রাকৃতিক শক্তিদায়ক
তালের শাঁসে প্রাকৃতিক চিনি, গ্লুকোজ ও খনিজ উপাদান থাকে যা শরীরকে শক্তি জোগায়। ক্লান্তি, দুর্বলতা ও মাথা ঘোরার মতো সমস্যায় এটি তাৎক্ষণিকভাবে উপকার দেয়। বিশেষ করে যারা বাইরে কাজ করেন বা কায়িক পরিশ্রম করেন, তাদের জন্য তালের শাঁস একটি প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
তালের শাঁসে ভিটামিন A, B, C, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে। গ্রীষ্মকালে ভাইরাস, জ্বর বা পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে নিয়মিত তালের শাঁস খাওয়া যেতে পারে।

প্রস্রাবের সমস্যা কমায়
তালের শাঁস প্রস্রাবের অসুবিধা, জ্বালাভাব,
বা বারবার প্রস্রাবের সমস্যা নিরসনে কার্যকর। এটি প্রাকৃতিক ডিউরেটিক হিসেবে কাজ করে এবং কিডনি পরিষ্কারে সহায়তা করে। কিডনি সুস্থ রাখতে চাইলে গ্রীষ্মকালে তালের শাঁস খাওয়া  উপকারী।

শিশুর জন্য উপকারী
কচি তালশাঁস শিশুদের জন্যও নিরাপদ ও উপকারী। এটি শিশুর হজমে সাহায্য করে এবং শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। তবে শিশুকে দেওয়ার আগে ভালোভাবে পরিস্কার করে দেওয়া উচিত।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে
তালের শাঁসে খুব কম পরিমাণ ক্যালরি থাকে, অথচ এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। তাই যারা ওজন কমানোর ডায়েট করছেন তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার। এটি খেলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা লাগে না।

Link copied!