নখ শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, বরং স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবেও কাজ করে। মজবুত ও চকচকে নখ সুস্থতার ইঙ্গিত দেয়। আবার নখ পাতলা হয়ে যদি সহজে ভেঙে পড়ে বা খসে পড়ে, তাহলে তা শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।জানেন কি, নখ ভেঙে যাওয়ার পেছনে কী কারণ রয়েছে।
পুষ্টির ঘাটতি
নখ গঠনে কেরাটিন নামক একধরনের প্রোটিনের ভূমিকা রয়েছে। শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, বায়োটিন এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সের অভাবে নখ দুর্বল ও পাতলা হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বায়োটিন (Vitamin B7) এর ঘাটতি থাকলে নখ ভেঙে যায়। আয়রনের অভাবে (রক্তস্বল্পতা) নখ পাতলা হয়ে খোসা খসে পড়ে। ভিটামিন C এবং E-এর ঘাটতি ত্বক ও নখে প্রভাব ফেলে।
অতিরিক্ত পানি বা কেমিক্যালের সংস্পর্শ
নখ যদি দীর্ঘ সময় ধরে পানি, সাবান, ডিটারজেন্ট বা স্যানিটাইজারের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে এর প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ও তৈলাক্ততা নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে নখ শুকিয়ে গিয়ে ভেঙে যেতে থাকে।
হরমোনের পরিবর্তন
নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা, মেনোপজ বা থাইরয়েডের সমস্যা হলে নখ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে নখ সহজেই ভেঙে যেতে পারে।
বয়সজনিত কারণ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নখের গঠন দুর্বল হয়, এর আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে নখ পাতলা হয়ে ভেঙে যায়, বিশেষত বয়স্কদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
চর্মরোগ বা ছত্রাক সংক্রমণ
নখে যদি ছত্রাক সংক্রমণ হয় (Onychomycosis), তাহলে তা পুরু বা পাতলা, বিবর্ণ ও দুর্বল হয়ে যায়। এতে নখের গঠন পরিবর্তিত হয় এবং সহজেই ভেঙে পড়ে।
অতিরিক্ত নেইলপলিশ ও রিমুভার ব্যবহার
নেইল পলিশ বা অ্যাসিটোনযুক্ত নেইল রিমুভার দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে নখের উপরিভাগ দুর্বল হয়। এতে কেরাটিন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নখ পাতলা হয় ও ভেঙে যেতে থাকে।
আঘাত বা ট্রমা
নখে লাগাতার আঘাত (যেমন নখ কামড়ে ফেলা, কঠিন জিনিসে চাপ খাওয়া) হলে কেরাটিন কোষ ভেঙে যায়, ফলে নখ দুর্বল হয়।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন
নখ বারবার ভেঙে যাচ্ছে এবং নতুন নখ উঠছে না।
নখে দাগ, হলদে রঙ বা দুর্গন্ধ দেখা যাচ্ছে। নখের নিচে ফোস্কা বা পুঁজ জমছে, একসঙ্গে চুল পড়ে যাওয়া বা ত্বক শুকিয়ে যাচ্ছে এমন লক্ষণ জটিল রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।