স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “সাধারণ জনগণ সচেতন হলে মব ভায়োলেন্স বন্ধ হবে। মব ভায়োলেন্স, চাঁদাবাজিকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা দরকার। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যত উঁচু লেভেলের চাঁদাবাজ হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
সোমবার (১৪ জুলাই) কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “শুধু বাহক নয়, মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে। মাদক ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনে। তাই মাদক নির্মূলে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।”
কক্সবাজারের ওপর দিয়ে মাদক আসছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “নৈতিকতা ও ইমানের দিক থেকে সব নাগরিকের দায়িত্ব নিজ অবস্থান থেকে মাদক নির্মূলে কাজ করা।”
রোহিঙ্গা ক্যাম্প মাদক, অস্ত্র ও অপরাধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা বিষফোড়ায় পরিণত হয়েছে। কঠোরতার মাঝেও তাদের অপরাধকর্ম আমাদের ভাবাচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একজন উপদেষ্টাও রয়েছেন। তিনি চেষ্টা করছেন কীভাবে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায়।”
বিয়াম ফাউন্ডেশন আঞ্চলিক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বীরপ্রতীক, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভার আগে, কক্সবাজারের বিজয় সরণি সড়কের হোটেল শৈবাল সংলগ্ন স্থানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ সময় জুলাই আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের রক্তের ওপর বর্তমান বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে। তাদের শুধু তারিখে তারিখে নয়, প্রতিনিয়ত স্মরণ করা দরকার। জুলাই যোদ্ধাদের অবদানের কারণেই আমরা স্বৈরাচারমুক্ত দেশ পেয়েছি। সেই আত্মত্যাগের স্মারক এটি। জুলাইয়ে নিহত ও আহতদের যে অবদান, তা কখনও টাকা দিয়ে পোষানো যাবে না। তবুও আমরা আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “পূর্ত মন্ত্রণালয়কে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্তম্ভটির নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে জেলা প্রশাসন ও পূর্ত বিভাগ যৌথভাবে কাজ করছে।”