• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিশু অটিজমে আক্রান্ত? যেভাবে সচেতন হবেন মা-বাবা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২২, ১২:৫৭ পিএম
শিশু অটিজমে আক্রান্ত? যেভাবে সচেতন হবেন মা-বাবা

শনিবার (২ এপ্রিল) বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস। বিশ্বজুড়ে অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হয়। এই বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘এমন বিশ্ব গড়ি অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করি’।

অটিজম শিশু বা ব্যক্তির প্রতিভা বিকাশ করার মধ্য দিয়ে তাদের সহযোগিতা করা এবং বিশ্বকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে উঠে এসেছে এবারের বিষয়ে। অটিজম মূলত অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি)। ছোটবেলা থেকেই শিশুর আচরণে এটি ধরা পড়ে। অটিজম শিশুর চলাফেরা, অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা, অঙ্গভঙ্গি, মুখের অভিব্যক্তি এবং অন্যান্য আচরণের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। তারা সহজেই নতুনকে গ্রহণ করতে পারে না।

অটিজম শিশুর একেকজনের ক্ষেত্রে সমস্যার ধরনও ভিন্ন হয়। তবে তাদের প্রতিভা থাকে। তাদের দক্ষতা অসমভাবে বিকশিত হয়। তারা সংগীতচর্চায়, স্মৃতি বা কোনো নির্দিষ্ট শিল্পের ক্ষেত্রে বা কোনো সৃষ্টিশীল কাজে দক্ষতার প্রমাণ দেয়। তাদের সেই প্রতিভাকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে পরিবারের। বাবা-মায়ের সহযোগিতায় অটিজম শিশুরা নিজের দক্ষতার বিকাশ করতে পারে। সেই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতাও জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যেই অটিজম সমস্যা ধরা পড়ে। এটি মানসিক বিকাশজনিত সমস্যা। অনেকের ক্ষেত্রে এটি সহজেই ধরা পড়ে। আবার অনেক শিশুর আচরণে অটিজমের সমস্যা বোঝা মুশকিল। এ ক্ষেত্রে শিশুর মধ্যে কিছু আচরণগত সমস্যা রয়েছে কি না, তা লক্ষ্য করতে হবে।

ভারতের কলকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শিশুর দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বৃদ্ধিও একটি স্তরে হয়। শিশুর স্বাভাবিক আচরণ থাকে। কাউকে দেখে হাসা, ইঙ্গিত করলে সেদিকে তাকানো, শব্দ শুনে অনুভূতি প্রকাশ করা এসবই শিশুর স্বাভাবিক আচরণ। এসব প্রতিক্রিয়া যখন শিশু সঠিকভাবে করে না, তখনই বুঝতে হবে শিশু ওটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত।

অটিজমের ঝুঁকিতে যারা বেশি

  • পরিসংখ্যানগত তথ্য অনুযায়ী, মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে অটিজম চার গুণ বেশি।
  • জাতিগোষ্ঠী বা সামাজিক পটভূমির মানুষের মধ্যে এই রোগ দেখা দেয়।
  • এই রোগের সঙ্গে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে। বংশে কারও এই রোগ থাকলে অটিজম শিশুর জন্ম হতে পারে।
  • বেশি বয়সে সন্তানধারণ করলেও অটিজম শিশুর জন্ম হতে পারে।
  • গর্ভবতী মা অ্যালকোহল বা অ্যান্টি-সিজার জাতীয় ওষুধ খেলে অটিজম শিশু জন্মাতে পারে।
  • গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ফিনাইলকিটোনুরিয়া ও রুবেলা থাকলে অটিজমের ঝুঁকি বাড়ে।

অটিজম রোগীর উপসর্গ

  • অটিজমের সমস্যায় শিশু কারও সঙ্গে মেলামেশা করতে চায় না।
  • খেলার সময় অনেক খেলনার মধ্যেও একটি নিয়েই খেলে।
  • নতুন কোনো বিষয় গ্রহণ করতে সমস্যা হয়। নতুনের প্রতি তাদের আগ্রহ কম থাকে।
  • অটিজম শিশুর নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় না।
  • অটিজম শিশু শুধু নিজেকে নিয়েই থাকে। তাদের মধ্যে উদাসীনতার বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
  • এরা কোনো একটি কাজ করতে ভালোবাসে এবং সেই কাজটিই ক্রমাগত করতে থাকে।
  • কোনো বিষয় বা বস্তুকে শব্দে, প্রতিক্রিয়া অথবা ইঙ্গিতে বোঝাতে এরা অক্ষম হয়।
  • অনেকে শিশুর মধ্যে মৃগীজনিত রোগ দেখা যায়।
  • কখনো কখনো অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী হয়।

অটিজম রোগের যে সচেতনতা প্রয়োজন

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের পরামর্শ অনুযায়ী, ১৬ থেকে ২৪ মাস বয়সী শিশুদের অটিজম বিশেষভাবে পরীক্ষা করা জরুরি। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অটিজম শিশুর বিকাশ সহজতর হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে অটিজম শিশুর যত্ন নিলে তারা নিজের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে।

 

 

সূত্র: আনন্দবাজার

Link copied!