• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শজনেপাতার গুঁড়া উপকারী না ক্ষতিকর


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৩, ০৪:৪৩ পিএম
শজনেপাতার গুঁড়া উপকারী না ক্ষতিকর

অতি পরিচিত একটি সবজি হলো শজনে। শজনের ডাঁটা অসাধারণ সুস্বাদু খেতে। মৌসুম এলে এটির চাহিদা থাকে তুঙ্গে। না, আজ শজনেডাটার কথা বলব না। বহুকাল ধরেই আয়ুর্বেদে ব্যবহার হয়ে আসা বহুগুণে ভরপুর শজনেপাতার কথাই জানাব। শজনেপাতা পাওয়া কঠিন হয়ে যায় শহুরে জীবনে। তবে এর গুঁড়া পাওয়া যায় বাজারে। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন যে শজনেপাতার এই গুঁড়া কী আদৌ কোনো উপকারী না ক্ষতি করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, শজনেপাতা পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। এ জন্য গবেষকেরা শজনেপাতাকে ‘নিউট্রিশনস সুপার ফুড’ উপাধি দিয়েছেন, একই সঙ্গে শজনেগাছকে বলা হচ্ছে মিরাকল ট্রি। মানবদেহে যেসব উপাদানের নিয়মিত প্রয়োজন, তার সবই শজনেপাতায় আছে। এ পাতায় প্ল্যান্ট প্রোটিন ও আয়রনের উপস্থিতি বেশি। এটিকে শুকিয়ে গুঁড়া করে খাওয়া হলে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকবে, একদম নষ্ট হবে না।

প্রতি গ্রাম শজনেপাতায় একটি কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি ও দুই গুণ বেশি প্রোটিন থাকে। গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন এ এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম বিদ্যমান আছে শজনেপাতায়। ফলে এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতাসহ বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতিজনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। পুষ্টির পরিমাণ কাছাকাছি বলে কেউ প্রতিদিন দুধ খেতে না পারলে এক চামচ করে শজনেপাতার গুঁড়া খেতে পারেন।

এতে প্রচুর জিংক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রন বিদ্যমান, যা অ্যানিমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শজনে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অবদান রাখে। মানুষের শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ প্রোটিন, যার গাঠনিক একক হলো অ্যামাইনো অ্যাসিড। শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবলিজম এবং অন্য শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে অ্যামাইনো অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষের শরীরের যে ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়, তার সব কটিই এই শজনেপাতার মধ্যে বিদ্যমান।

ইউএসডিএর মতে, ১০ গ্রাম শজনেপাতায় ১৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম (ডেইলি ভ্যালু ১৫ শতাংশ), ২ মিলিগ্রাম আয়রন (ডেইলি ভ্যালু ১১ শতাংশ), ১৬০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ও ৩ গ্রাম প্রোটিন আছে।

শজনেপাতা শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মতো কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। নিয়ম করে দৈনিক শজনেপাতার গুঁড়া সেবন করলে শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে।

শজনেপাতা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। ১ টেবিল চামচ শজনেপাতার গুঁড়ায় ১৪ শতাংশ প্রোটিন, ৪০ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ২৩ শতাংশ আয়রন বিদ্যমান। ৬ টেবিল চামচ শজনেপাতার পাউডার একজন অন্তঃসত্ত্বা এবং স্তন্যদায়ী মায়ের প্রতিদিনের আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। শজনেপাতার গুঁড়ায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এটি যকৃৎ ও কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবেও কাজ করে শজনেপাতা। শজনেতে ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এতে ৩৬টির মতো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এ ছাড়া এটি অকালবার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে, ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দারুণ কার্যকর।

সূত্র: প্রথম আলো

Link copied!