কোভিড পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতাকে পোস্ট কোভিড সিনড্রোম বা লং কোভিড হিসেবে আখ্যায়িত করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা মূলত কয়েকটি সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এগুলো মধ্যে রয়েছে- কোভিড নিউমোনিয়া, হাইপারটেনশন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, নিউরোজিক্যাল সমস্যা, হৃদরোগ, লিভারের ক্ষতি, কিডনিতে সংক্রমণ।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংক্রমণ গুরুতর বা মৃদু যাই হোক না কেন সুস্থ হওয়ার ১২ সপ্তাহ পরও যদি রোগীর দেহে অসুস্থতা দেখা যায় এবং এর কোনও ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে বুঝে নিতে হবে 'লং কোভিড' হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) ‘লং কোভিডে’ আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় ২০০টির মতো লক্ষণ চিহ্নিত করেছে। তবে উল্লেখযোগ্য কিছু উপসর্গ রয়েছে যা ‘লং কোভিড’-এর নির্দেশ করবে। এর মধ্যে রয়েছে-
- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। অল্পতে হাঁপিয়ে ওঠা। বেশিক্ষণ কাজ করতে সমস্যা হওয়া।
- স্বাদ ও গন্ধ ফিরে এলেও কিছুটা পরিবর্তন অনুভব হবে।
- সারা শরীরের হাড়ের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা অনুভব হওয়া।
- হৃৎপিণ্ডের ঘন ঘন স্পন্দন হয়। বুক ধড়ফড় করে। অল্পতে ভয় অনুভব হয়।
- বুকে ব্যথা থাকতে পারে। অনেক সময় বুকে টানটান ভাব অনুভূত হয়।
- চরম ক্লান্তি অনুভব হয়। কোনও কাজ বেশি সময় ধরে করতে পারে না।
- বিষন্নতা অনুভব হয়।
- স্মৃতি শক্তির উপর প্রভাব পড়তে পারে। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
- মনঃসংযোগের সমস্যা হয়। কাজে মনোযোগ দিতে পারে না। অস্থিরতা অনুভূত হয়।
- 'ব্রেন ফগ' বা বোধশক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।
‘লং কোভিড’-এর চিকিৎসা কী হতে পারে এই বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান-
- কোভিড রোগী সুস্থ হওয়ার পর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
- করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা গ্রহণ করতে হবে।
- নিয়মিত ফুসফুসের ব্যায়াম করতে হবে।
- পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
- অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।
- হার্ট, লিভার কিংবা কিডনিতে সমস্যা দেখা গেলে নিয়মিত চিকিৎসা অনুসরণ করতে হবে।
- বিশেষজ্ঞের পরামর্শে প্রয়োজনীয় মেডিসিন বা ইনহেলার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সুস্থ হওয়ার পরও নিয়মিত ফলোআপ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।