• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দেশে দেশে ইফতার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৩, ১২:৪৫ পিএম
দেশে দেশে ইফতার

একেক দেশের একেকরকম  সংস্কৃতি। আর এই সাংস্কৃতিক বৈচিত্রতার কারণে বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের নানা সামাজিক আচার পালনের রকমফের রয়েছে। এ জন্যেই ইন্দোনেশিয়ার একটি মুসলিম পরিবারের ইফতার আয়োজন সৌদি আরবের একটি মুসলিম পরিবার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। চলুন তাহলে দেখে আসি  কয়েকটি ভিন্ন দেশের ভিন্নরকম ইফতারের অয়োজন—

মিসরীয়দের ইফতার

পরিবারের সবাই মিলে মিসরীয়রা ইফতার করতে পছন্দ করেন। ইফতারের সময় রঙিন লন্ঠন জ্বালায় মিসরীয়রা । রোকাক নামে একটা মচমচে ভাজা টোস্ট, যা তৈরি হয় মাংস দিয়ে, ইফতারিতে খুব জনপ্রিয়। এ ছাড়া ‘ফুল মেদেমাস’ ও বাদামি রুটি খেয়ে থাকেন তাঁরা। ফুল মেদেমাস আসলে মটরশুঁটি, টমেটো ও বাদাম দিয়ে তৈরি একধরনের খাবার। এটি রান্না করা হয় অলিভ অয়েল দিয়ে। মিসরীয়দের ইফতারে হাঁসসহ নানা ধরনের মাংসের পদ থাকে।

সৌদি আরবের ইফতার
ইফতারে সৌদিরা ‘অ্যারাবিক কফি’ পান করেন। আর খেজুর তো থাকেই। সুপ, ভাজা অথবা বেক করা নানা রকম পুর ভরা পেস্ট্রি খেয়ে থাকেন তাঁরা। আর সৌদির পূর্বাঞ্চলের লোকেরা ইফতারে সালুনা নামের একটি খাবার খান, যা মাংস ও সবজির স্টু দিয়ে তৈরি। সৌদি আরবের তাবুক শহরে আড়াই দশক ধরে বাস করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাজী নাসরুল। জানালেন, সৌদিরা খেজুর ও ক্রিমজাতীয় খাবার খেয়ে নামাজ পড়তে যান। এরপর লেবন হালিব, যা আমাদের দেশের বিরিয়ানির মতো ও মিষ্টিজাতীয় খাবার হারিসা কোনাফা খেয়ে থাকেন।

লেবাননের ইফতার
লেবাননে ইফতারের সময় ঘোষণা করতে প্রতিদিনই কামান দাগা হয়। ইফতারে ফাত্তুশ সালাদ নামে জনপ্রিয় একটি খাবার তাঁদের পছন্দ। গাজর, টমেটোসহ সব রকমের মৌসুমি ফল দিয়ে খাবারটি তৈরি হয়। এর ওপরে আবার ছড়িয়ে দেওয়া হয় রুটির টুকরা।

জর্ডানের ইফতার
মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ জর্ডানের মুসলমানদের ইফতার শুরু হয় দধি, স্যুপ ও জুস দিয়ে। তাঁদের প্রিয় একটি খাবারের নাম মানসাফ। ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি খাবারটি পরিবেশন করা হয় অ্যারাবিক রুটি বা ভাত এর সঙ্গে।

ইরাকের ইফতার
ইরাকে শুকনো অ্যাপ্রিকট ও তেঁতুল দিয়ে একধরনের শরবত বানানো হয়। ইফতারে সবার পছন্দ এই শরবত, যা দূর করে সারা দিনের তৃষ্ণা।

ইরানের ইফতার
ইফতারে ইরানের ঘরে ঘরে তৈরি হয় জাফরানের ঘ্রাণযুক্ত একধরনের হালুয়া। আর নামাজ শেষে তারা খায় স্যান্ডউইচ, মিষ্টি চা, তাবরেজি চিজ। আশ রাসতেহ নামে একটি ঘন সবজির স্যুপও সেখানে ইফতারের সময় আগ্রহ নিয়ে খাওয়া হয়।

মালয়েশিয়ানদের ইফতার
ইফতারকে মালয়েশিয়ানরা বলেন ‘বারবুকা পুয়াসা’। খেজুর ও পানি দিয়ে ইফতার শুরু করেন তাঁরা। বান্দুং ড্রিংক, আখের রস, সয়াবিন মিল্ক নামের রকমারি পানীয় থাকে। ভারী খাবারের মধ্যে থাকে চিকেন রাইস, নাসি লেমাক, লাকসা।

মালদ্বীপের ইফতারে
মালদ্বীপের মুসলমানরা ইফতারে গারুধিয়া নামে একটি খাবার খেয়ে থাকেন। এটা একটা মাছের পদ, যা পরিবেশন করা হয় ভাত, লেবু, মরিচ ও পেঁয়াজ দিয়ে। আরেকটি জনপ্রিয় খাবারের নাম কুলহি বোয়াকিবা। এটা একটা ঝাল ঝাল ফিশ কেক। আরেকটি খাবারের নাম থারিদ, যা বানানো হয় চাল ও গরু বা খাসির মাংস দিয়ে।

শ্রীলঙ্কানদের ইফতার
শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের ইফতারে বিভিন্ন খাবারে নারকেলের দুধের ব্যবহার বেশি। এ ছাড়া আদিক নামে একটি রুটি তাঁরা খেয়ে থাকেন।

হায়দরাবাদ এর ইফতার
ভারতে ঐতিহ্যবাহী হায়দরাবাদ শহরে ইফতার শুরু হয় সুস্বাদু হালিম দিয়ে। অপর দিকে কেরালা ও তামিলনাড়ুর মুসলমানরা ইফতার করেন নমবু কাঞ্জি নামে একধরনের খাবার দিয়ে। মাংস, সবজি ও পরিজ দিয়ে প্রস্তুত করতে হয় খাবারটি। এ ছাড়া দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ইফতারের শুরুতে থাকে খেজুর, তাজা ফল, ফলের রস। এরপর পাকোড়া,সামোসার মতো ভাজা আইটেম। প্রসঙ্গত, ভারতে মুসলমানদের একটি অংশ মসজিদেই ইফতার করেন।

Link copied!