মা দিবস: ভালোবাসা-শ্রদ্ধা হোক প্রতিদিনের চর্চা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৫, ১০:১৭ পিএম
মা দিবস: ভালোবাসা-শ্রদ্ধা হোক প্রতিদিনের চর্চা
ছবি: সংগৃহীত

‍‍`মা‍‍` ছোট্ট শব্দ হলেও এর গভীরতা পরিমাপের নয়। সন্তানের জীবনে মায়ের ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও অবদানের কোনো তুলনা নেই। এই বিশেষ সম্পর্ক ও অবদানের স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় মা দিবস। তবে অনেকের হয়তো জানেন না, এই দিবসের সূচনা কোথায়, কবে এবং কীভাবে হলো?

মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর রীতি একেবারে আধুনিক নয়। প্রাচীন গ্রীস ও রোম সভ্যতায় মা বা মাতৃদেবীর (যেমন গ্রীসে “রেয়া”, রোমে “সিবেল”) উদ্দেশ্যে উৎসব পালন করা হতো। আবার ইংল্যান্ডে খ্রিস্টীয় মধ্যযুগে “মাদারিং সানডে” নামে একটি দিন পালন করা হতো। যেখানে মানুষ নিজ নিজ ‍‍`মাদার চার্চ‍‍`-এ ফিরে  যেতেন এবং বাড়ির মা’কে সম্মান জানাতেন।

তবে আধুনিক মা দিবসের ধারণা এসেছে আমেরিকা থেকে। আধুনিক মা দিবসের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন আনা জার্ভিস। আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা আনা ছিলেন তার মায়ের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল। তার মা, অ্যান রিভস জার্ভিস, গৃহিণীদের নিয়ে "Mothers’ Day Work Clubs" গঠন করেছিলেন। যা স্বাস্থ্য সচেতনতা ও যুদ্ধোত্তর পুনর্বাসনে কাজ করত। তিনি বিশ্বাস করতেন, মায়েদের অবদানকে একদিন বিশেষভাবে স্মরণ করা উচিত।

মায়ের মৃত্যুর পর, আনা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করেন। বহু প্রচেষ্টার পর অবশেষে ১৯০৮ সালে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্যারাফটন শহরে প্রথম আনুষ্ঠানিক মা দিবস পালন করা হয়। এটি ছিল আনার মায়ের মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে আয়োজিত একটি স্মরণ সভা।

আনা জার্ভিসের আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজ্যে মা দিবস পালনের প্রবণতা শুরু হয়। তার প্রচেষ্টাতেই ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মা দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকেই মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর থেকেই ধীরে ধীরে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই দিনটি পালিত হতে শুরু করে। যদিও কিছু দেশে ভিন্ন তারিখে মা দিবস পালন হয়। তবে অধিকাংশ দেশই মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকেই বেছে নিয়েছে।

বাংলাদেশেও মা দিবস বর্তমানে একটি জনপ্রিয় দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার দিবসটি পালন করা হয়। মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা হয় নানা উপহার, শুভেচ্ছা বার্তা বা সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের মাধ্যমে।

মা দিবসের শুরুটা ছিল গভীর শ্রদ্ধা ও আবেগের প্রকাশ। সময়ের ব্যবধানে এটি বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসে রূপ নিয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় কথা, একটি দিন নয়—মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা হোক প্রতিদিনের চর্চা।

Link copied!