কাপড় ধোয়া নিয়ে এখন আর চিন্তা করতে হয় না। আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে ওয়াশিং মেশিন কাপড় ধোয়ার সমাধান করে দিচ্ছে। মধ্যবিত্ত থেকে বিত্তশালী অধিকাংশ বাড়িতেই এখন ওয়াশিং মেশিন দেখা যায়। তবে এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞ থাকেন। বিশেষ করে ওয়াশিং মেশিন ইনস্টল শেষ হওয়ার পর, নতুন ব্যবহারকারীরা একটু শঙ্কায় থাকেন। তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো এই আয়োজনে।
ওয়াশিং মেশিন ইনস্টল হওয়ার পর, মেশিনে কাপড় দিয়ে কুইক ওয়াশ করে দেখে নিন।
ওয়াটার ইনলেট ভাল্বের ফিল্টার, টাব বা ড্রেন ফিল্টার কীভাবে খুলে ক্লিন করতে হয়, এটি জেনে নিবেন।
ওয়াশমোড এবং অন্যান্য ফিচার সমপর্কে যতটা সম্ভব জেনে নিন।
ওয়াশিং মেশিনের সঙ্গে ইউজার ম্যানুয়াল বা গাইড (মেশিনের সাথে আসা বইটি) পড়ে নিন। বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিশেষ করে ইরর কোডগুলো, কোডগুলো সমপর্কে জানা থাকলে, মেশিনের ৫০% সমস্যার সমাধান নিজেই করতে পারবেন।
ওয়াশিং মেশিনের সঙ্গে আসা কার্টন, ককসিট, শিপিং বোল্ট এগুলো যত্ন করে রাখবেন। পরবর্তী সময়ে এগুলোর দরকার হতে পারে।
ওয়ারেন্টি কার্ড বা মেমো যত্ন করে রাখতে হবে। সার্ভিস বা মোটরের ওয়ারেন্টির ক্ষেত্রে এগুলোর দরকার হবে।
ওয়াশিং মেশিনকে সবসময় দেয়াল থেকে একটু দূরে রাখতে হবে। যদি জরুরি না হয়, তাহলে মেশিনের নিচে স্ট্যান্ড দিয়ে মেশিনকে অযথা উঁচু করা ঠিক না।
ওয়াশিং মেশিনের সব থেকে বড় শত্রু হচ্ছে তেলাপোকা, ইঁদুর আর পিঁপড়া। এইসব থেকে মেশিনকে দূরে রাখতে হবে।
লিকুইড কিংবা পাউডার ডিটারজেন্ট সুবিধামতো যে কোনো ব্র্যান্ডেরই ব্যবহার করতে পারেন। তবে পরিমাপ ঠিক রাখুন।
ওয়াশিং মেশিনে কতটুকু ডিটারজেন্ট দিবেন? কাপড় অনুযায়ী যতটুকু ডিটারজেন্ট দিতে হয়, টপের ক্ষেত্রে তার থেকে একটু বেশি। ফ্রন্টের ক্ষেত্রে তার সমান দিতে হবে।
ওয়াশমোডের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী কাপড় দিতে হবে। ড্রামের ৩ ভাগের ২ ভাগ কাপড় দিতে হবে। ১ ভাগ খালি রাখতে হবে। না হলে কাপড় পরিষ্কার হবে না।
মেশিনে কাপড় দেওয়ার আগে প্যান্ট বা শার্টের পকেট চেক করতে হবে। টাকা, কাগজ, টিস্যু পেপার, চাবির রিং, পয়সা, চুলের কাঁটা, কলম, পেন্সিল বা কোনো ধাতব জিনিস আছে কি না চেক করতে হবে। ভুলে এগুলো দিয়ে দিলে মেশিনকে স্টপ করে দিন। এগুলো সরিয়ে নিন। এরপর কাপড় ওয়াশ করুন।
ওয়াশিং মেশিনের ড্রামে সবসময় লম্বা আর ভারী কাপড়টি আগে দিতে হবে। এরপর ক্রমানয়ে ছোট কাপড় দিতে হবে। বড় কাপড় বা ভারী কাপড় যেন কোনোভাবেই মোট কাপড়ের চেয়ে অর্ধেকের বেশি না হয়, এমন হলে ভারী কাপড়টি আলাদা ওয়াশ করতে হবে।
ড্রামে বেশি কাপড় যেমন দেওয়া যাবে না, তেমনি একেবারে কম কাপড়ও দেওয়া ঠিক হবে না। ১ কেজির কম কাপড় দেওয়া ঠিক হবে না।
কাপড় পুরোপুরি ভেতরে না রেখে কাপড়সহ দরজা বন্ধ করা যাবে না, এতে কাপড় আর দরজা ২টিই ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
পুরুষদের জিন্সের চেইন/হুক এগুলো লাগিয়ে নিতে হবে। ব্লাউজের বোতাম লুজ থাকলে লাগিয়ে নিতে হবে। মহিলাদের আন্ডার গার্মেন্টসের হুক লাগিয়ে নিতে হবে। হালকা ছেঁড়া কাপড় মেশিনে দেওয়া যাবে না।
চুমকির কাজ, পাথরের কাজ, গ্লাস থাকা কাপড় মেশিনে দেওয়া যাবে না। ওয়াশেবল ডায়াপার, ফোমের আন্ডার গার্মেন্টস, ওয়াশেবল স্যানিটারি ন্যাপকিন মেশিনে দেওয়া যাবে না।
রঙিন কাপড় ও নতুন কাপড় সাদা কাপড়ের সঙ্গে একত্রে দেওয়া যাবে না।
মেশিনে ইরর কোড উঠে মেশিন বন্ধ হয়ে গেলে স্টপ বাটন চেপে পুনরায় প্লে বাটন বা অন বাটন চাপতে হবে।
ড্রাম থেকে দূর্গন্ধ হলে সময়মতো টাব ক্লিন করতে হবে। কাপড় ওয়াশের পর ড্রামের দরজা যতটা সময় সম্ভব খুলে রাখতে হবে। টাব ক্লিনের সময় ৩-৪ চায়ের চামুচের ভিনেগার দিলে ব্যাড স্মেল চলে যাবপ।
কাপড় ওয়াশের সময় মেশিন অস্বাভাবিক শব্দ করলে তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দিতে হবে। এরপর কাপড় ড্রামে ছড়িয়ে ছিড়িয়ে দিয়ে আবারও চালু করতে হবে।