জাপানে ফুমিও কিশিদার নেতৃত্বাধীন সরকারের চার মন্ত্রী তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিকে কেন্দ্র জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বর্তমানে আস্থা সংকটে ভুগছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) চার মন্ত্রী পদত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
আস্থা সংকটটি মূলত দলের আর্থিক হিসাব থেকে ৫০ কোটি ইয়েনের হুদিস না থাকাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দলের এক তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সংখ্যক টিকিটের অতিরিক্ত টিকিট যারা বিক্রি করেছেন, বাড়তি অর্থগুলো তাদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, তদন্তের অংশ হিসেবে কৌঁসুলিরা দলীয় কার্যালয়গুলোতে তল্লাশি এবং আইনপ্রণেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
এ দুর্নীতি কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো তিনিসহ চার মন্ত্রীর পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছেন। মাতসুনো বলেন, তিনি ছাড়া অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুনজি সুজুকি এবং কৃষিমন্ত্রী ইচিরো মিয়াশিতাও তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
মাতসুনো জাপান সরকারের প্রধান মুখপাত্র হিসেবেও নিযুক্ত। তিনি বলেন, “আরও পাঁচ উপমন্ত্রী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা মিচিকো উয়েনোও দায়িত্ব ছাড়ছেন।”
নিশিমুরা সাংবাদিকদের বলেন, “যে রাজনৈতিক তহবিলকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে, সেটির কারণে আমার চারপাশেও সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে যেহেতু তদন্ত চলছে, আমিও চাই সবকিছু ঠিকঠাক হোক।”
সম্প্রতি কিশিদার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে, তিনি সেগুলো মীমাংসা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি এলডিপির প্রতি জনগণের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করবেন।
আশাহি শিম্বুনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে দুই কোটি ইয়েনের বেশি পরিমাণ অর্থের হিসাব না দিতে পারায় কিশিদা নিজেও সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন।
জাপানের একটি জনমত জরিপে দেখা যায়, ২০১২ সালে জাপানে এলডিপি দল ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে সবচেয়ে নড়বড়ে অস্থানে রয়েছেন কিশিদার। মূল্যস্ফীতির কারণে কিশিদা সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ ভোটাররা। তাছাড়া আগের দুর্নীতির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারায় কিশিদার প্রতি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কিশিদার মেয়াদ থাকলেও আগামী বছর এলডিপিতে নেতৃত্বসংক্রান্ত ভোটাভুটির আগে তিনি আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :