• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ মুহররম ১৪৪৬

দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৫, ১০:৫৯ এএম
দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক
ছবি : সংগৃহীত

সুস্থ জীবনযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রায়ই অবহেলিত সূচক হলো প্রস্রাবের স্বাভাবিকতা। প্রতিদিন কতবার প্রস্রাব করছেন, তার রং কেমন বা কোনো অস্বস্তি হচ্ছে কি না, এই সাধারণ বিষয়গুলো আপনার কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।

আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততায় এই সংকেতগুলো এড়িয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক, কিন্তু এর পরিণাম হতে পারে মারাত্মক। বিশেষ করে, প্রস্রাবের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি হওয়া কিডনির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ সাধারণত দিনে ৬ থেকে ৮ বার প্রস্রাব করে থাকেন। তবে এই সংখ্যাটি সবার জন্য নির্দিষ্ট নয়। এটি নির্ভর করে আপনার বয়স, তরল পানের পরিমাণ, আবহাওয়া এবং শারীরিক কার্যকলাপের উপর। উদাহরণস্বরূপ, গরমের দিনে বা বেশি ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ ও সংখ্যা উভয়ই কমতে পারে। আবার, শীতকালে বা বেশি পানি পান করলে এর সংখ্যা ১০ বার পর্যন্তও হতে পারে। তাই, সংখ্যার চেয়ে প্রস্রাবের পরিমাণ এবং এর আনুষঙ্গিক লক্ষণগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া বেশি জরুরি।

প্রস্রাবের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়া বা দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার অভ্যাস কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অপর্যাপ্ত পানি পানের ফলে প্রস্রাব ঘনীভূত হয়, যা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। এই সংক্রমণ মূত্রথলি থেকে কিডনি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে, যাকে ‘পায়োলোনেফ্রাইটিস’ বলা হয়। সময়মতো চিকিৎসা না করালে এই সংক্রমণ কিডনির স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া, কর্মক্ষেত্রে বা বাড়ির বাইরে- টয়লেটের অপ্রতুলতার কারণে প্রস্রাব চেপে রাখার যে প্রবণতা, তা সংক্রমণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি কিডনির উপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে এবং এর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

অন্যদিকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার প্রস্রাব হওয়াও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যদিও বেশি পানি পান করলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু এর সাথে যদি জ্বালাপোড়া, তলপেটে ব্যথা বা প্রস্রাবের রঙে পরিবর্তন (যেমন লালচে বা ঘোলাটে) ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়, তবে এটি ইউরিনে ইনফেকশনের স্পষ্ট ইঙ্গিত। ডায়াবেটিসের মারাত্মক রোগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও ঘনঘন প্রস্রাব হতে পারে। রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ কিডনিকে বাড়তি পানি, মূত্র হিসাবে ফিল্টার করে বের করতে বাধ্য করে, যা দীর্ঘ মেয়াদে কিডনির ফিল্টারগুলোকে নষ্ট করে দেয়। বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলেও প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয় এবং বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে, যা কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

Link copied!