• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

বজ্রপাতে আহত হলে কী করবেন?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৩, ০৫:৩০ পিএম
বজ্রপাতে আহত হলে কী করবেন?

কোনো ব্যক্তির ওপর বজ্রপাত আঘাত হানলে তার শরীরের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এসময় আক্রান্ত ব্যক্তির হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। একারণে বেশিরভাগ আক্রান্ত ব্যক্তিই তাৎক্ষণিক মারা যান। আবার যদি কোনো গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, টাওয়ার কিংবা উঁচু ভবনের উপর বজ্রপাত হয়, তখন সেখান থেকে এক ধরনের বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়। এসময় আশপাশে যদি কেউ থাকে তার শরীরে দ্রুত বিদ্যুৎ প্রবেশ প্রবাহিত হয়। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, বজ্রপাতে কেউ আহত হলে তাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত ব্যক্তির মতো করেই চিকিৎসা দিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশির ভাগ মানুষ বজ্রপাতে মারা যান। তবে আহত ব্যক্তির হৃৎস্পন্দন যদি দ্রুত স্বাভাবিক করা যায় তাহলে তাকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব। বজ্রপাতের পরপরই কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা গেলে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায়।

চলুন জেনে নিই বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা কী হতে পারে:

প্রথমেই আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশের অবস্থা দেখে নিতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো বিপদসংকুল পরিবেশে থাকলে তা দূর করতে হবে। যেমন বৈদ্যুতিক তার বা কোনো বিষাক্ত কিছু আশপাশে থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।

আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান আছে কিনা দেখতে হবে। জ্ঞান থাকলে তাকে স্বাভাবিকভাবে চিৎ করে শুইয়ে দিতে হবে। যাতে তিনি ধীরস্থিরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন। জ্ঞান না থাকলে তার শ্বাস নেওয়ার পথ যেমন- নাক, মুখ ও গলার ভেতরের অংশ পরিষ্কার আছে কিনা দেখতে হবে। তার মাথা পেছনের দিকে টেনে, থুঁতনি ওপরের দিকে তুলে শ্বাসনালি খুলে দিতে হবে। যদি কফ, রক্ত বা অন্য কোনো কিছু আটকে থাকে, তবে তা সরিয়ে শ্বাস নেওয়ার পথ করে দিতে হবে।

ব্যক্তির এক পাশের বুক বরাবর বসে এক হাতের তালুকে বুকের মাঝ বরাবর ও একটু বামদিকে স্থাপন করতে হবে। তার ওপর অপর হাত স্থাপন করে ওপরের হাতের আঙুল দিয়ে নিচের হাতকে আঁকড়ে ধরতে হবে। হাতের কনুই ভাঁজ না করে সোজাভাবে বুকের ওপর চাপ দিতে হবে।

এমন গতিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন প্রতি মিনিটে ১০০-১২০টি চাপ প্রয়োগ করা যায়। এভাবে প্রতি ৩০টি চাপ প্রয়োগের পর আক্রান্তের মুখে মুখ রেখে দুইবার ফু দিতে হবে। এটাকে বলে রেসকিউ ব্রেথ। এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে যেন বুকের পাঁজর ২ থেকে ২.৫ ইঞ্চি নিচে নামে। যাতে চাপ হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ পড়ে। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত, বা জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত, অথবা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস চালু না হওয়া পর্যন্ত একই কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

জ্ঞান ফিরলে বা শ্বাস-প্রশ্বাস চালু হলে তাকে একপাশে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর হাসপাতালে নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে ধরার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। কারণ আহত কিংবা মৃত ব্যক্তির শরীরে বিদ্যুৎ থাকে না।

Link copied!