বাজারে শীতের সবজি আসতে শুরু করলেও দাম কমার লক্ষণ নেই। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েই চলছে সবজির দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে চাল ও চিনির দামও। প্রতি কেজি চিনি ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। মানভেদে চালের দাম বাড়ছে কেজি প্রতি ২ থেকে ৫ টাকা। তবে বাজারে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ব্রয়লার মুরগির দামে। কেজিতে ১০ টাকা কমে এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর বনশ্রী এলাকার মুদি ব্যবসায়ী সাহেদ হোসেন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সরকার খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করেছে কেজি ৯০ টাকা, কিন্তু এখন আমাদের প্রতি কেজি চিনি কিনতে খরচ হচ্ছে ১০৬ টাকায়। তাহলে কীভাবে ৯০ টাকায় বিক্রি করব?”
সাহেদ হোসেন আরও বলেন, “চিনি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো বাজারে চিনির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণেই এখন চিনির দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহেও এক বস্তা চিনি ৪ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতে পেরেছি। এখন বস্তা কিনতে হচ্ছে ৫ হাজার ২০০ টাকায়। তার সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচ।”
আরেক মুদি ব্যবসায়ী মামুন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সরকার চিনির দাম কত নির্ধারণ করেছে, সেটা আমি জানি না। আমাকে এখন বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করছি। এর আগে কখনোই প্রতি কেজি চিনির দাম ১০০ টাকা ছাড়ায়নি।”
গত সপ্তাহ থেকে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেশি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে চাল। চিকন চাল (মিনিকেট) প্রতি কেজি ৭৫ টাকায়, ব্রি-২৮ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় এবং নাজিরশাইল বিক্রি করা হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আমদানি করা আদা প্রতি কেজি ১৬০ টাকা এবং দেশি আদা ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি করা হচ্ছে ১২০ টাকা এবং দেশি রসুন ৮০ টাকা কেজি দরে। ডিম প্রতি ডজন ১৪৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
শীতের আগাম সবজি বাজারে এসেছে আগেই। সরবরাহও স্বাভাবিক। কিন্তু দাম বাড়তি। কোনো সবজিই প্রতি কেজি ৬০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পটোল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা; শিম ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, পাকা টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ১০০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ছোট আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, লাউ আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারে আসা এক প্রবাসীর স্ত্রী আমেনা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “করোনার কারণে অনেক হিসাব করে চলতে হয়েছে। করোনা যাওয়ার পর মনে হয়েছে একটু শান্তিতে বাঁচব। এখন দেখি আর বেশি হিসাব করতে হচ্ছে। এখন বাজার করার জন্য পরিকল্পনা করে আসতে হয়। সবকিছুই হিসাব করে নিয়ে যাই। প্রবাসে স্বামীর আয়ে ভাটা পড়েছে।”
লিটন নামে আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, কিন্তু বেতন বাড়ে না। নির্দিষ্ট বেতন, সারা মাস হিসাব করে চলতে হয়। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা জরুরি। দোকানদার ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে, একেক দোকানে একেক দাম।”
আপনার মতামত লিখুন :