• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

যমজ সন্তান কেন হয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৩, ১২:৪৩ পিএম
যমজ সন্তান কেন হয়

যমজ সন্তান হওয়াটা প্রায় সকলের কাছেই অত্যন্ত আনন্দের ও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় হয়। যমজ সন্তান হওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেয়া তথ্যমতে যমজ সন্তান হওয়ার কারণ জেনে নেয়া যাক চলুন—

যমজ সন্তান কেন হয়
চিকিত্সাবিজ্ঞানের মতে, মায়ের গর্ভে দুটি শুক্রাণু একসঙ্গে একটি ডিম্বাণুর সঙ্গে অথবা দুটি ভিন্ন ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষিক্ত হয়ে যমজ সন্তানের জন্ম হয়। দুটি ভিন্ন ডিম্বাণুর সঙ্গে দুটি শুক্রাণু নিষিক্ত হয়ে যে যমজের জন্ম হয়, বৈশিষ্ট্যগতভাবে তারা কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু একই ডিম্বানুর সাথে দুটি শুক্রানু নিষিক্ত হয়ে সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি শিশুর জন্ম হলেও তারা যমজ হয়, এই যমজদের বৈশিষ্ট্য অনেকটাই একই রকম। শিশু দুটি পুরোপুরি একই জিন বহন করার কারণে তাদের লিঙ্গ এবং সব শারীরিক বৈশিষ্ট্য একই রকম হয়। এদের আইডেন্টিকাল টুইন বলা হয়।

অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ঝুঁকি
গর্ভকালীন মায়ের অতিরিক্ত বমি হতে পারে। রক্তে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়াজনিত জটিলতাও তৈরি হয়। আবার ভ্রূণের থলিতে অতিরিক্ত পানি জমা, যাকে পলিহাইড্রামনিওস বলে। এর ফলে এবং একের অধিক বাচ্চা থাকার ফলে পেট অনেক বড় হয়ে যায়। মায়ের চলাফেরা ও ঘুমাতে কষ্ট হয়। ওপরের দিকে চাপ প্রয়োগের ফলে শ্বাসকষ্টও হয়। জরায়ুর ভেতরে বাচ্চার অস্বাভাবিক অবস্থান, অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে মাথা নিচের দিকে না থেকে পশ্চাৎদেশে থাকা কিংবা আড়াআড়িভাবে থাকতে পারে। গর্ভকালীন রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। একাধিক বাচ্চা, অতিরিক্ত পানির জন্য জরায়ুর ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে যাওয়ার ফলে সময়ের আগেই পানির থলি ফেটে যায় বা পানি ভেঙে যায় এবং প্রসবও হয়ে যায়।

প্রসবের সময় ও পরে
প্রসবের আগে বাচ্চার নাড়ি বের হয়ে যাওয়া। বিশেষ করে বাচ্চা আড়াআড়ি থাকলে এবং পানির থলে ফেটে গেলে নাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায় দ্রুত মাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব না হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে এসব ক্ষেত্রে। প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রসবের পর জরায়ু অনেক বড় হয়ে যাওয়ার ফলে পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতেও দেরি হয়। প্রদাহের আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিভিন্ন জটিলতার কারণে একাধিক বাচ্চার জন্য পর্যাপ্ত বুকের দুধ না পাওয়ার ঘটনা ঘটে।

নবজাতকের জটিলতা
গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। সময়ের আগে প্রসব হওয়ার ফলে কম ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় নবজাতক। জন্মগত ত্রুটি থাকতে পারে। জরায়ুর ভেতরে মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রি–একলাম্পসিয়া বা রক্তক্ষরণের কারণে বাচ্চার জন্মের পরপর শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এক বাচ্চার রক্ত অন্য বাচ্চার শরীরে চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এর ফলে দুটো বাচ্চাই নানা জটিলতায় ভোগে।

মায়ের করণীয়
আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে একাধিক শিশুর অবস্থান গর্ভকালের প্রথম দিকেই এখন শনাক্ত করা যায়। যদি একাধিক সন্তানের বিষয়টি জানতে পারেন, তবে আতঙ্কিত না হয়ে মাকে অবশ্যই গর্ভকালীন পরিচর্যায় থাকতে হবে। যেমন:

  • শিশু ঠিকমতো বেড়ে ওঠার জন্য প্রতিটি মায়ের আগের চেয়ে অন্তত ৩০০ ক্যালরি পরিমাণ বেশি পুষ্টি দরকার হয়। তাহলে যমজ বাচ্চার জন্য আরও ৩০০ ক্যালরি অতিরিক্ত খেতে হবে। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
  • একটি বাচ্চার জন্য যে বিশ্রাম, তার চেয়ে বেশি বিশ্রাম নিতে হবে মাকে। ২৪ সপ্তাহ পার হওয়ার পর সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকা উচিত সময়ের আগে প্রসব ঠেকানোর জন্য।
  • আয়রন, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড,সবকিছুর মাত্রা বাড়িয়ে খেতে হবে। এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি নিরূপণ এবং অন্যান্য জটিলতা থাকলে সেটি  আগে থেকে বোঝার জন্য প্রয়োজনে একাধিকবার সময়মতো আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হবে।

Link copied!