ডেঙ্গু রোগের পাশাপাশি আরও একটি রোগ থেকে বাঁচতে সচেতন থাকতে হবে আমাদের। আর সেটি হলো পানিবাহিত রোগ। মূলত পানিবাহিত রোগের শুরু হয় অপরিষ্কার পানীয় বা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে। দূষিত পানি শরীরে প্রবেশ করলেই পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি তৈরি হয়।যথেষ্ট সতর্ক না থাকলে দ্রুত চিকিৎসা না নিলে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই এ সময় খাবার ও পানীয় গ্রহণের ক্ষেত্রে সবারই সতর্ক থাকা জরুরি। পানিবাহিত রোগের মধ্যে রয়েছে—
টাইফয়েড
দূষিত পানির মাধ্যমে টাইফয়েড ছড়ায়। দুর্বল স্যানিটেশনের কারণে এ রোগ বেশি ছড়ায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে উচ্চ জ্বর, দুর্বলতা ও পেটে ব্যথা। প্রথম দিকে এসব উপসর্গ তেমন গুরুতর না হলেও পরবর্তী সময়ে এসব লক্ষণ রোগীর মৃত্যুর কারণও হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না করলে টাইফয়েড মারাত্মক হতে পারে।
কলেরা
কলেরা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি মারাত্মক রোগ, যা দূষিত খাবার ও পানির কারণে ঘটে। কলেরার লক্ষণ হিসেবে ডায়রিয়া, বমি ও পেটে ব্যথার মতো গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কলেরা একটি পানিবাহিত রোগ। এটি হলে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন। চিকিৎসায় দেরি হলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আমাশয়
এই রোগটি দূষিত খাবার, পানি বা মলের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি অন্ত্রকে প্রভাবিত করে, ফলে তীব্র পেটে খিঁচুনি, রক্ত ও শ্লেষ্মাসহ ডায়রিয়া এমনকি জ্বরেরও কারণ হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্তি ও জটিলতা প্রতিরোধে প্রাথমিকভাবেই এর চিকিৎসা নিন, নাহলে গুরুতর অবস্থা হতে পারে রোগীর।
হেপাটাইটিস এ
এটি দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। এটি সাময়িকভাবে লিভারকে সংক্রমিত করে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে জন্ডিস (ত্বক ও চোখ হলুদ হওয়া), ক্লান্তি ও পেটে ব্যথা। যদি লক্ষণগুলো কয়েক দিন একটানা অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
শিগেলোসিস
শিগেলোসিস একটি রোগ, যা দূষিত পানি, খাদ্য বা মল দ্বারা ছড়ায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে ডায়রিয়া, বমি, পেটে ব্যথা ও মলের সঙ্গে রক্ত পড়া ইত্যাদি। শিশুদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। যদি এই রোগ সংশ্লিষ্ট কোনো লক্ষণ টের পান, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রতিরোধে করণীয়
- এ ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পানি ভালো করে ফুটিয়ে, ফিল্টার ব্যবহার করে বা ওয়াটার পিউরিফায়ারের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে তবেই পান করুন।
- সাবান-পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে খাওয়ার আগে।
- জীবাণু বহন করতে পারে এমন কিছুর সংস্পর্শে আসার পর যত দ্রুত সম্ভব স্যানিটাইজ করতে হবে হাত-পা। সম্ভব হলে সব সময় স্যানিটাইজার মাখুন।
- অপরিষ্কার স্থান থেকে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা বাদ দিতে হবে।
- টাইফয়েড ও হেপাটাইটিস এ-এর মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে ভ্যাকসিন নিয়ে রাখুন আগে থেকেই।