• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

স্মৃতিশক্তি বাড়াবেন যেভাবে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৩, ১২:১০ পিএম
স্মৃতিশক্তি বাড়াবেন যেভাবে

আমরা জানি মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করেই চলেছে দিন দিন। অনেককেই দেখা যায় চোখ বন্ধ করে ভুরু কুঁচকে কিছু মনে করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিছুই মনে পড়ছে না আসলে। কিন্তু এইভাবে কত দিন। চলুন জেনে নিই এই বিষয়ে কিছু পরামর্শ—
 

ফোকাস
কিছু মানুষ মাল্টি টাস্কিংয়ে দক্ষ। আবার কোনো কোনো চাকরির ক্ষেত্রে মাল্টি টাস্কিং অপরিহার্য। একসময় একটি কাজ করলে যেকোনো কিছুই বেশি ভালো করে মনে রাখতে পারবেন। মাল্টি টাস্কিংয়ের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট কাজে নিজেকে নিয়োজিত করলে সবকিছু মনে থাকবে।

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
মনের মধ্যে সব সময় চিন্তার মেঘ জমতে শুরু করলে কোনো কিছুই সুষ্ঠুভাবে মনে রাখা যাবে না। অবসাদের তুলনায় স্বস্তিতে থাকলে মানুষ যেকোনো বিষয় ভালোভাবে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য মনে রাখতে পারে। তাই বর্তমানের দৌড়ঝাঁপের জীবনে স্বাভাবিক হলেও, এই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

খাবারদাবার
ব্লুবেরি ও লাল আঙুরের মধ্যে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি কেমিক্যাল থাকে। মস্তিষ্ক এই কেমিক্যাল শোষণ করে স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ব্ল্যাকবেরি, প্লাম ও লাল বাঁধাকপিও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে।

মস্তিষ্ককে চাপে ফেলবেন না
মস্তিষ্কের নিজস্ব একটি গ্রহণ ক্ষমতা রয়েছে। অনেকেই নিজের মগজে জ্ঞান ভান্ডার ঠেসে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরীক্ষার আগে সারা দিন-রাত জেগে পড়াশোনা করার, অতিরিক্ত তথ্য আদায় করার প্রবণতা অনেক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই দেখা দেয়। আপনার তাড়া দিয়ে পড়াশোনা বা জ্ঞান অর্জনের প্রবণতার কারণে কিছু মনে থাকবে না, বরং যেটুকু মনে রাখা যেত তা-ও ভুলে যাবেন। তাই এক রাতে সমস্ত পড়া শেষ করার পরিবর্তে স্বস্তিতে ও শান্তিতে পড়াশোনা করুন। এ ক্ষেত্রে কোনো তাড়াহুড়ো করবেন না।

মনে করার প্রবণতা ত্যাগ করুন

অনেককেই দেখেছেন চোখ বন্ধ করে ভুরু কুঁচকে কিছু মনে করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ভুরু কোচকানো বিশেষ পার্থক্য সৃষ্টি না-করলেও, চোখ বন্ধ করে কিছু মনে করার চেষ্টায় আরও ভুলে যেতে পারেন। চোখ বন্ধ করার ফলে মস্তিষ্ক চোখ থেকে যে সেন্সরি স্টিমুলেশন সংগ্রহ করে তা বাধিত হয় এবং মস্তিষ্ক স্বস্তিতে লাভ করে এবং কোনো কিছু মনে করার জন্য অনেক শক্তি ব্যয় করে ফেলে।

নিজের ভাষায় অনুবাদ 
অনেক সময় তথ্য যেভাবে আমাদের সামনে পেশ করা হয়, তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে না-পারার কারণে তা ভুলে যাই আমরা। তাই যেকোনো তথ্যই হোক না কেন, তাকে নিজের ভাষায় অনুবাদ করে নিন। ফলে তা সহজেই মনে রাখতে পারবেন।

অন্তর্জালে জড়াবেন না
সামগ্রিকভাবে না হলে, কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হই। ফলে আমাদের মস্তিষ্ক অলস হয়ে পড়তে পারে। তাই যেকোনো প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য এই অন্তর্জালে জড়ানোর আগে কিছুক্ষণ নিজে সেই উত্তর মনে করার চেষ্টা করুন। ফলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও কমবে।

ভিজ্যুয়ালাইস করুন
ফোন বা ল্যাপটপে অনেকেই রিমাইন্ডার দিয়ে রাখেন। এর কারণ কোনো কিছু দেখলে তা ভালোভাবে মনে রাখা যায়। যেমন অফিস ফেরত দুধ, ডিম, মাংস, সবজি নেওয়ার জন্য অনেকে রিমাইন্ডার দিয়ে থাকি। তাই তা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। অনেকে আবার কোনো কাজ করার আগে একবার কল্পনা করে দেখে নেন, কীভাবে, কোন উপায়ে সেই কাজটি করছেন। মনে মনে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সেটিকে নিজের স্মৃতির বাক্সে বন্দি রাখতে চান। এর ফলে স্মৃতিশক্তি মজবুত থাকে।

একবারের জন্য সবকিছু ওলটপালট করে দিন
রুটিনে বাঁধা জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে স্মৃতিশক্তিও অলস হয়ে পড়বে। কারণ আপনার স্মৃতিশক্তিও অভ্যাসেরই দাস। প্রতিদিন একই রুটিন মেনে চলার ফলে, কোনো কিছু মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা পড়ে না, যন্ত্রের মতো সব কাজ করে নেওয়া যায়। তাই বেশ কিছু সময়ের পর একবারের জন্য নিজের রুটিন পাল্টাতে পারেন। আবার ধরুন বাড়িতে রাখা জিনিসপত্রের স্থান পরিবর্তন করে ফেলুন। প্রথম প্রথম জিনিস খুঁজতে বেগ পেতে হবে। কিন্তু এর সুবিধা হলো, এটি আপনার স্মৃতিশক্তিকে নতুন স্থান মনে রাখার জন্য খাটতে বাধ্য করবে। স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি বাড়বে এর ফলে।

ব্যায়াম করুন
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সুনিশ্চিত করতে ব্যায়াম সাহায্য করবে। ব্যায়াম স্মৃতিশক্তিকে মজবুত করতে সাহায্য করবে। কারণ, ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। আবার ব্যায়াম করলে মধুমেহর সম্ভাবনাও কমানো যাবে। উল্লেখ্য, মধুমেহ রোগ স্মৃতিশক্তিকে প্রভাবিত করে।

Link copied!