বর্তমানে সৌন্দর্যচর্চায় তিল অপসারণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এই প্রবনতা বেশি দেখা যাচ্ছে। মুখ বা শরীরের দৃশ্যমান তিলকে তারা সৌন্দর্যের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে। সোশ্যাল মিডিয়া, ফ্যাশন ট্রেন্ড এবং তারকাদের প্রভাবেও অনেক নারী এখন তিল অপসারণের দিকে ঝুঁকছেন। তবে অনেকেই জানেন না,।তিল অপসারণ আদৌ কতটা নিরাপদ?
অনেকে মনে করেন, তিল মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে। আবার অনেকে ফ্যাশন সচেতনতা, মেকআপের সহজলভ্যতা কিংবা নির্দিষ্ট মুখাবয়ব পেতে তিল অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন। ক্লিনিক্যালি এসব তিল হয়তো ক্ষতিকর নয়, কিন্তু বাইরের সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই তিল মুছে ফেলতে চান।
তিল বা মোল হলো ত্বকে উপস্থিত মেলানিন-সমৃদ্ধ কোষের একটি গুচ্ছ। এটি জন্মগত বা পরে তৈরি হতে পারে। কিছু তিল ম্যালিগন্যান্ট বা ক্যানসারসৃষ্টিকারীও হতে পারে (যেমন মেলানোমা)।
অপসারণের পদ্ধতি
তিল অপসারণের কয়েকটি প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে:
লেজার থেরাপি: নির্দিষ্ট আলো দিয়ে ত্বকের নিচের তিল কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয়।
সার্জিকাল এক্সিশন: ছুরি দিয়ে তিল কেটে ফেলা হয় এবং সেলাই দেওয়া হয়।
শেভ এক্সিশন: ত্বকের উপরের দিক থেকে তিল কেটে ফেলা হয়, সাধারণত কোনো সেলাই লাগে না।
ক্রায়োথেরাপি: তরল নাইট্রোজেন প্রয়োগ করে তিল ফ্রিজ করে ফেলা হয়।
কতটা নিরাপদ
তিলের প্রকৃতি, অপসারণের পদ্ধতি, এবং চিকিৎসকের দক্ষতার উপর অপসারণের নিরাপত্তা নির্ভর করে।
তিলের প্রকৃতি: কিছু তিল আসলে ক্যানসারজনিত হতে পারে। তাই যেকোনো তিল অপসারণের আগে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সন্দেহজনক তিলকে আগে বায়োপসি করে নেওয়া ভালো।
চিকিৎসক ও ক্লিনিক: অভিজ্ঞ ত্বক বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করলে অপারেশন অনেকটাই নিরাপদ হয়। কিন্তু অপ্রশিক্ষিত বিউটি পার্লারে কিংবা অনলাইনে পাওয়া নানা "ডিআইওয়াই" কিট দিয়ে করলে ইনফেকশন, দাগ বা এমনকি ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
তিল অপসারণের পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেমন – রক্তপাত, ইনফেকশন, ত্বকে স্থায়ী দাগ, হাইপারপিগমেন্টেশন ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, তিল যদি আকৃতি, রং, বা গঠন পরিবর্তন করে তবে তা পরীক্ষা করা জরুরি। ABCDE গাইডলাইন (Asymmetry, Border, Color, Diameter, Evolving) অনুসরণ করে তিলের অবস্থা নিরীক্ষণ করা যেতে পারে। ঘরোয়া উপায়ে তিল কাটাকাটি বা ঘষাঘষি করা উচিত নয়। এতে ত্বকের ক্ষতি ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। শুধুমাত্র অভিজ্ঞ ত্বক বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে অপসারণ করানো উচিত। তিল অপসারণের আগে ও পরে ত্বকের যত্ন ও সুরক্ষা (যেমন: সানস্ক্রিন ব্যবহার) আবশ্যক।