• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ মুহররম ১৪৪৬

আশুরার রোজা রাখার নিয়ম জানুন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৫, ০৬:২৯ এএম
আশুরার রোজা রাখার নিয়ম জানুন
ছবি: সংগৃহীত

আশুরা মুসলমানদের কাছে একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এটি মহররম মাসের ১০ তারিখ, যা ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনকে ঘিরে ইসলামী ইতিহাসে রয়েছে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। রাসুল (সা.) আশুরার দিন রোজা রাখতেন এবং সাহাবাদেরও রোজা রাখার উৎসাহ দিতেন। তাই এই রোজার রয়েছে বিশেষ ফজিলত। তবে আশুরার রোজা রাখার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও আদব রয়েছে।

আশুরা কী এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ
‘আশুরা’ শব্দটি আরবি ‘আশারাহ’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘দশ’। অর্থাৎ, মহররম মাসের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলা হয়। এই দিনে বহু ঐতিহাসিক ও নবী সম্পর্কিত ঘটনা ঘটেছে বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। যেমন:
হজরত মূসা (আ.) ফেরাউনের হাত থেকে এই দিনে মুক্তি পান। হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা জুদি পর্বতে ভিড়ে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আগুন থেকে মুক্তি পান। 

তাই এদিনে অনেক নবী রোজা রাখতেন। তবে রাসুল (সা.) মদিনায় এসে দেখেন ইহুদিরাও এই দিনে রোজা রাখে। তখন তিনি বলেন, “আমরা মূসার চেয়ে বেশি হকদার।” অতঃপর তিনি নিজেও রোজা রাখেন এবং মুসলমানদেরও তা রাখতে বলেন।

আশুরার রোজার ফজিলত
আশুরার রোজার সবচেয়ে বড় ফজিলত হলো—
"পূর্ববর্তী এক বছরের ছোট খাটো গুনাহ মাফ হয়ে যায়।"
(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)

এটি নফল রোজা হলেও এর ফজিলত অসাধারণ। তবে এটি একটা না রেখে ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ মিলিয়ে রাখা উত্তম।

রোজা রাখার সঠিক নিয়ম

নিয়তের গুরুত্ব
রোজা রাখার জন্য নিয়ত অবশ্যই করতে হবে। আশুরার রোজার নিয়ত হৃদয়ে করলেই হয়। তবে সাহরিতে নিয়ত করা উত্তম। নিয়তের দোয়া: 
উচ্চারণ: "নাওয়াইতু সৌমা গাদিন আন সুন্নাতি আশুরা লিল্লাহি তা'আলা"
অর্থ: “আশুরার সুন্নাত রোজা রাখার নিয়ত করলাম আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।”

সাহরি খাওয়া
যদিও নফল রোজায় সাহরি না খাওয়াও বৈধ, তবে সাহরি খাওয়া সুন্নাহ ও বরকতপূর্ণ। ফজরের আগে হালকা কিছু খেলেও রোজা হয়ে যাবে।

ইফতারের সময়
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে হবে। ইফতারের সময় দোয়া করা উত্তম, কেননা রোজাদারের দোয়া কবুল হয়।

একটি নয়, দুই দিন রোজা রাখুন
রাসুল (সা.) বলেন: "তোমরা আশুরার রোজা রাখো এবং ইহুদিদের বিরোধিতা করো, এর আগে বা পরে এক দিন রোজা রাখো।" (মুসনাদ আহমদ: ২১৫৪, সহিহ)। সুতরাং ৯ ও ১০ মহররম অথবা ১০ ও ১১ মহররম যেকোনো দুই দিন রোজা রাখা সুন্নাহ।

আশুরার দিনে করণীয়
রোজা রাখা, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও ইস্তিগফার, গরিবদের দান, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদ্ব্যবহার, পরিবারের সদস্যদের খাবার বা পোশাকের ব্যবস্থা করা উত্তম। রাসুল (সা.) বলেন:
"যে ব্যক্তি আশুরার দিন তার পরিবার-পরিজনের জন্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে, আল্লাহ তার জন্য বছরের বাকি সময়ও বরকত বৃদ্ধি করেন।"
(বায়হাকি)

যা থেকে বিরত থাকতে হবে

আশুরাকে শুধুই শোকের দিন হিসেবে পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক নয়।

কপালে আঘাত করা, মাতম করা বা নিজেদের কষ্ট দেওয়া হারাম।

কোনো অতিরঞ্জিত সংস্কার বা বিদআতমূলক কর্মকাণ্ড পালন করা উচিত নয়।

Link copied!