গ্রামবাংলা কিংবা শহুরে জীবনে বেশ পরিচিত কচু। পুষ্টিগুণে বেশ সমৃদ্ধ। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। গ্রামের বাড়ির আনাচে-কানাচে কিংবা রাস্তার পাশে জলধারায় কচু জন্মায়। বিভিন্ন প্রজাতির কচুর ফলন হয় এই দেশে। এর মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হচ্ছে মুখিকচু, দুধকচু, মানকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখিকচু ও ওলকচু। শুধু কচু নয়, রান্নায় বেশ জনপ্রিয় কচুশাকও। কচু পাতাকেই শাক হিসাবে রান্না করা হয়। গরম ভাতের সঙ্গে কচুশাক ভোজনরসিক বাঙালির প্রিয় খাবার।
কচুশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম কচু শাকে ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন, ১০ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.২২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন), ০.২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ (রাইবোফ্লেবিন), ১২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’, ১.৫ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৫৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়।
এ ছাড়া কচুশাক খেলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। কচুশাকের স্বাস্থ্যগুণের কথা জানাব আজকের এই আয়োজনে।
- কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাই রক্তশূন্যতা পূরণের জন্য কচুশাক খেতে পারেন।
- কচুশাকে ভিটামিন এ রয়েছে। রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধে এটি কার্যকর। এছাড়া কচু শাক দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।
- কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। এতে থাকা লৌহ উপাদান শরীরে সহজে আত্তীকরণ হয়। এছাড়া শরীরের ক্ষত সারাতেও কার্যকর কচুশাক।
- কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। এতে খাবার সহজে হজম হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
- শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচুশাক অনেক বেশি কার্যকর। এতে থাকা আয়রন ও ফোলেট শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়িয় দেয়।
- কচুশাকে ভিটামিন কে রয়েছে, যা রক্তপাতের সমস্যাও প্রতিরোধ করে।
- কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস থাকে। দাঁত ও হাড়ের গঠন এবং ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে কচু শাক উপকারী।
- কচুশাক গর্ভবতী মায়ের জন্যও উপকারী। এতে নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা অনাগত শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য় উপকারী। ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণে কচুশাক খেতে পারেন।
- কচুশাক খেলে রক্তের কোলেস্টরেল কমায়। উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্যও কচুশাক বেশ উপকারী।
- কচুশাক ক্যানসার প্রতিরোধকও বটে। কোলন ক্যানসার ও ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে কচুশাক খেলে।