• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বসন্ত ছুঁয়েছে ফুল চাষিদের


মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০৬:০৯ পিএম
বসন্ত ছুঁয়েছে ফুল চাষিদের

শীতের শেষ আর ফাগুনের শুরুর সঙ্গে যোগ হয়েছে নানা উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে রমরমা এখন ফুলের বাজার। আর তাই খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রতিটি ফুলের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ গুন। যার ফলে বেশ প্রাণবন্ত হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাছে গাছে ফুলের সমারোহ। প্রকৃতি যেন রঙিন সাজে সেজেছে। অনেক তরুণ-তরণী বাগানে ঘুরতে এসেছেন। আবার দূর-দূরান্ত থেকে ফুল কিনতে এসেছেন অনেক ব্যবসায়ী। বাগান মালিকদেরও যেন দম ফেলার সময় নেই। বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের 
বাজার ধরতে ফুলের পরিচর্চা ও বেচা-বিক্রি নিয়ে বেশ ব্যস্ত ফুল চাষিরা।

মেহেরপুর সদর উপজেলার ইছাখালী গ্রামের ফুল চাষি টুটুল হোসেন। নিজের ৭ বিঘা জমিতে রজনীগনন্ধা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গ্লাডিওলাস গোলাপসহ কয়েকরকম ফুলের আবাদ করেছেন । ফুলের আবাদ করে বিঘাপ্রতি জমিতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা তার। কিছুদিন পূর্বেও যে ফুল ৩ টাকা ছিল এখন ১০-১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফুল চাষি টুটুল হোসেন বলেন, “করোনার সময় ফুল ব্যবসায় ধ্বস নেমেছিল। তখন আমরা ফুল চাষিরা লোকশানের মুখে পড়ি। অনেক ফুল চাষি ফুল চাষ ছেড়ে দিয়ে অন্য চাষাবাদে চলে গেছে। করোনার পর আমরা এই দুই বছরে আবার চেষ্টা করছি কিছুটা গুছিয়ে নিতে। এবার আমি ৭ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছি। আশা করছি বেচাকেনা ভালো হলে লাভবান হবো।”

রহিম রেজা নামের অপর এক ফুল চাষি বলেন, “এই মাসেই পরপর বেশকয়েকটি বড় অনুষ্ঠান আছে। ফুলও ভালো বিক্রি হচ্ছে। ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার বেচাকেনা হবে বলে আমি মনে করছি। তবে ফুলে রোগবালাই বেশি হয়। আমাদের পরিচর্যা বেশি করা লাগে। যেহেতু ফুলের বাজার মেহেরপুরে সেইভাবে তৈরি হয়নি, তাই ফুলের বাজার তৈরি করতে পারলে ফুল ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই ভালো হতো।”

শহরের বড়বাজারের ফুল ব্যাবসায়ী বকুল হোসেন বলেন, “অন্যান্য সময়ের তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল বেচাকেনা ভালো হয়। এবার ফুল সরবরাহ বেশি। আশা করছি বেচাকেনা ভালো হবে। ভালোবাসা দিবসে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গোলাপ ফুল বেশি বিক্রি হয়।”

ফুল কিনতে আসা রোজিনা বেগম, সুসান্ত, সুমাইয়া বলেন, “১৪ ফেব্রুয়ারি। সেই দিনটি আমরা ভালোবাসা দিবস হিসেবে জানি। আসলে প্রেমিক প্রেমিকা কিংবা স্বামী স্ত্রীকে ভালোবাসতে হবে সেটি বিষয় না। সবাই সবাইকে ভালোবাসতে পারে। মা বাবা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন, পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব সবার জন্যই ভালোবাসা দিবস। এই দিনে ভালোবাসার মানুষকে একটু স্পেশাল ফিল করাটা ভালো লাগে। এজন্য ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। আমরা অন্য সময়ে যে ফুল ৫০ টাকা দিয়ে কিনি সেই ফুলে এখন ২০০ টাকাতে কিনতে হয়। দাম অনেক বেশি হয়ে যায়। ফুলের দাম বেশি থাকলেও আমাদের ফুল লাগে। এই কারণে আমরা প্রাণউচ্ছলভাবে ফুলটা কিনে নিই।”

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, “ফুল চাষের জন্য আমাদের মেহেরপুরের মাটি অত্যন্ত উপযোগী। এ কারণে ফুল চাষ করে যথেষ্ট লাভবান হতে পারে চাষিরা। ফুলের আবাদ বাড়াতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া চাষিরা যেন নির্বিঘ্নে ফুল চাষ করতে পারে সেজন্য সবসময় পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ভালো বীজ কিনতে সহযোগিতা করছি আমরা।”

Link copied!