• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,
দুদকের পরিদর্শন

যে কারণে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে ‘টিউমার’


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম
যে কারণে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে ‘টিউমার’
মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক। ছবি : সংগৃহীত

দূর থেকে দেখলে যেকোনো মানুষেরই মনে হবে সড়কটিতে যেন একাধিক বিভাজক (ডিভাইডার) দেওয়া হয়েছে। কাছে গেলে দেখা যাবে, এগুলো আসলে কোনো বিভাজক নয়; সড়কের অন্তত ছয় জায়গা লম্বালম্বিভাবে উঁচু হয়ে গেছে। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা সড়কের এমন বেহলা দশাকে ‘সড়কের টিউমার’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের এমন দশার ছবি তুলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সরেজমিন অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঝিনাইদহ অফিস।

দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা পরিদর্শন করে। পরে নিম্নমানের বিটুমিনের কারণে মহাসড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে বলে প্রাথমিক সত্যতা পায় দুদক।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বলেন, “সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের বিটুমিনের ব্যবহার ও অন্যান্য অনিয়মের ফলে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের বেশ কিছু স্থানে পিচ-পাথরের জমাট বেঁধে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এতে যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে—এমন অভিযোগে অভিযানে নামে দুদক। অভিযান পরিচালনাকালে এনফোর্সমেন্ট টিম ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে। সরেজমিন পরিদর্শন ও এলাকাবাসীর বক্তব্য পর্যালোচনায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে মনে করছে এনফোর্সমেন্ট টিম।”

আকতারুল ইসলাম বলেন, “রাস্তার নমুনার ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট প্রাপ্তিসাপেক্ষে অভিযোগের বিষয়ে কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”

এ নিয়ে দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের স্থানে স্থানে দেখা দিয়েছে গর্ত ও ঢিবি। পাশ থেকে দেখতে ঢেউ খেলানো। কিছু জায়গায় ঢিবিগুলো দেখতে অনেকটা সড়ক বিভাজকের মতো। ঝুঁকি নিয়েই জাতীয় মহাসড়কটিতে যানবাহন চলাচলের কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।

এদিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ঢিবিগুলো মেশিন দিয়ে কেটে দিচ্ছে। কিন্তু দুই-চার দিন যেতে না যেতেই আবার আগের অবস্থা হয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে, সড়কটি দিয়ে ছোট যানবাহনও চলাচল করতে পারছে না।

সড়কটির এমন অবস্থার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুষছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করার কারণে সড়কের এ অবস্থা হয়েছে। এমনকি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীদের মতেও সড়ক নির্মাণকাজে ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেখানে ৮০-৯০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করলে সড়ক ড্যামেজ হবেই।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর, মাগুরা পার হয়ে এই সড়ক শুরু। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা-যশোরে চলাচলকারী পরিবহনগুলো এই সড়ক ব্যবহার করত। পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনা রুটের পরিবহনগুলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট হয়ে চলাচল করে। আর যশোরের পরিবহনগুলো ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল হয়ে চলাচল করে।

Link copied!