ডালিয়া প্রতিদিনই একটু আগে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। কোনোরকম বাড়তি কাজ বা মোবাইলের আসক্তিতে রাত জাগবেন না। যথারীতি আজও ঠিক সময়ে বিছানায় গেলেন। কিন্তু সারাদিনের স্ট্রেস আর শারীরিক ধকল সামলে আজও ঘুম আসতে চাইছে না। এমন সময় মনে পড়ে গলো তারই এক কাছের বন্ধুর কথা। যে কি না একই সমস্যার সম্মুখিন হয়েছিলেন। আবার সমস্যার সমাধানও খুঁজে পেয়েছিলেন। সমাধানটি ছিলো, যদি সহজে ঘুম না আসে তাহলে যা করতে হবে।
গরম দুধ
ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধ খেলে শরীরে ট্রিপটোফেন এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তাই সহজে ঘুম আসে। প্রতিরাতে এই নিয়মটি মেনে চললে আপনারও স্বাভাবিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে উঠবে।
একই সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন
প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। কাজের জন্য দেরিতে না ঘুমিয়ে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে কাজ শুরু করাটাই সবচেয়ে ভালো। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করলে ঠিক ওই সময়েই প্রাকৃতিকভাবেই আপনার ঝিমানো ভাব চলে আসবে। আর তখনই আপনাকে ঘুমাতে যেতে হবে।
বই পড়ুন
ঘুমানোর সব থেকে সহজ উপায় হলো বিছানায় লাইট বন্ধ করে শুয়ে থাকা। পাশে হালকা আলো জ্বালিয়ে বই পড়তে থাকা। তবে মোবাইল, ট্যাব, টিভি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে। তাই এবার থেকে আপনার বিছানার পাশে একটি বই রাখুন।
মেডিটেশন
চোখ বন্ধ করে ওপরে তাকিয়ে থাকুন। তারপর একটা বিশাল সাদা রং এর পর্দা কল্পনা করুন। তার মধ্যে হালকা নিল রঙের একটা সংখ্যা কল্পনা করুন, তা হলো ১৯। এরপর তা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে এবং আবার পর্যায়ক্রমে আরেকটি সংখ্যা আসছে, আর তা হলো ১৮। এইভাবে উল্টো কাউন্ট করতে থাকুন। এটি করতে হবে খুব ধীরে ধীরে। এইভাবে কিছুক্ষণ করার পর দেখবেন ঘুম চলে আসছে।
ইতিবাচক ভাবনা
ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাথা থেকে নেতিবাচক সকল চিন্তা দূর করে ইতিবাচক ও সুখকর ঘটনা মনে করার চেষ্টা করুন। দেখবেন ঘুম এসে গেছে।
সারাদিনের ঘটনা ভাবুন
ঘুমানোর আগে সারা দিনের ৩ টি ভালো ঘটনার কথা মনে করুন। ভালো মুহূর্তটির কথাই মনে করুন এবং আপনি কতটা ভাগ্যবান তা উপলব্ধি করুন।
শরীরচর্চা
শরীরচর্চা সারাদিন শরীরকে তরতাজা রাখে। স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ কমে। এতে রাতে আপনার ভালো ঘুম হবে। দুপুরে ও সন্ধ্যা ৭ টায় শরীরচর্চা করা লোকজনের তুলনায় সকালে আধা ঘণ্টার জন্য শরীরচর্চা করা লোকজন তুলনামূলকভাবে সহজে ভালো ঘুমাতে পারে। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ মানুষের ভালো ঘুম হয়।
দুপুরের পর তেতো খাবেন না
তেতো স্বাদের খাবারে এক ধরণের উত্তেজক পদার্থ থাকে, যেটি শরীরে চার থেকে সাত ঘণ্টা পর্যন্ত থেকে যায়। সেজন্য ঘুমানোর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আপনার শরীরে তেতো স্বাদের উত্তেজক পদার্থ নেই। কফি ছাড়াও চা, চকলেট ও সফট ড্রিংকসের মধ্যে কিছু তেতো স্বাদের উপাদান থাকে, যা আপনার ঘুম নষ্ট করতে পারে।
রাত্রে তাড়াতাড়ি খাবার খান
ঘুমাতে যাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। এছাড়া খাবারের পরিমাণ কম রাখুন। রাতে যত বেশি খাবেন হজমের সমস্যা তত বেশি সময় লাগবে। শরীর বিশ্রাম পাবে কম। তাই যত আগে সম্ভব রাতের খাবার শেষ করুন। মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন সৃষ্টির জন্য আপনার মস্তিষ্কে যথেষ্ট প্রোটিন লাগে। মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন ঘুমের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।