• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২, ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ইরানে এখন যা হচ্ছে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
ইরানে এখন যা হচ্ছে
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পর ইরানে দমন-পীড়নের এক নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। যুদ্ধ সাময়িকভাবে থেমে গেলেও ইসলামিক রিপাবলিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইরান।

বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মীরা সতর্ক করেছেন, সামরিক যুদ্ধের পাশাপাশি এখন ইরান অভ্যন্তরীণ ‘নিরাপত্তা শুদ্ধি অভিযানে’ নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে কেরমানশাহ প্রদেশে ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রদেশটির প্রধান কৌঁসুলি হামিদরেজা কারিমি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে এক ইউরোপীয় নাগরিককে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। অল্প কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে বেশির ভাগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে অন্তত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বিভিন্ন শহরে আরও ডজনখানেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের অপরাধ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম অথবা সন্দেহজনক যোগাযোগকে দায়ী করা হয়েছে।

অন্তত চারজন ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার আইআরজিসি-ঘনিষ্ঠ তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানায়, হরমোজগান প্রদেশে এক ইউরোপীয় নাগরিককে ‘পর্যটকের ছদ্মবেশে’ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার ফার্স নিউজ জানায়, হামেদান প্রদেশে আরেক ইউরোপীয় নাগরিককে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এর আগে, রোববার কেরমানশাহ প্রদেশ থেকে আরও একজন ইউরোপীয়কে একই অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেহর নিউজ।

এ ছাড়া ২০ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কাজি প্রদেশে এক ‘ইহুদি-জার্মান’ নাগরিককে সেনাবাহিনীর সংবেদনশীল ও পারমাণবিক এলাকাগুলোর তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

‌এর মধ্যেই ইরানের পার্লামেন্ট গোয়েন্দা ও অনুপ্রবেশসংশ্লিষ্ট মামলাগুলোতে দ্রুত বিচার ও কঠোর সাজা নিশ্চিত করতে নতুন আইন পাস করেছে। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, ‘আগের আইনে অনেক গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে বিচার করা সম্ভব হতো না। এখন আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারব।’

আরও ৩ মোসাদ গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

ইরানে আরও তিনজন মোসাদ গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) সকালে এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির বার্তা সংস্থা মেহের।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকৃত তিন মোসাদ গুপ্তচর হলেন এদ্রিস আলী, আজাদ শোজায়ী ও রসুল আহমাদ। তারা ইরানি ব্যক্তিদের হত্যার উদ্দেশ্যে দেশটিতে সরঞ্জাম আমদানি করেছিলেন বলে অভিযোগ।

সম্প্রতি তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়। পুরো ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বুধবার সকালে তাদের সাজা কার্যকর করা হয়।

মেহের জানিয়েছে, এই তিনজন গুপ্তচর তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত হন এবং বুধবার ইরানের উরমিয়া শহরে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

যাদের টার্গেট করা হচ্ছে

গ্রেপ্তারদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে কথাবলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেককে ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা’, ‘সামাজিক বিশৃঙ্খলা’ এবং ‘বিদেশি যোগাযোগ’-এর অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

‌বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ভেতরে ইসরায়েলি গুপ্তচরদের অনুপ্রবেশ ইরান সরকারকে অস্থির করে তুলেছে। যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামলেও সরকারের নজর এখন দেশের ভেতরের ‘প্রতিপক্ষ’দের ওপর।

Link copied!