বিয়ের সম্পর্ক বিশ্বাস, ভালোবাসা আর পারস্পরিক সম্মানের উপর গড়ে ওঠে। কিন্তু কখনো কখনো এই সম্পর্কেই ফাটল ধরাতে পারে পরকীয়া। স্বামীর আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন এলে, অনেক স্ত্রী সন্দেহে পড়ে যান—তবে কি স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়েছেন? সন্দেহ না করে বাস্তবতার নিরিখে বুঝে নেওয়া জরুরি। কিছু লক্ষণ বা আচরণগত পরিবর্তন দেখলে বুঝে নিবেন স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়েছেন।
আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন
স্বামী যদি হঠাৎ খুব বদলে যান। যেমন আগে যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতেন বা সময় দিতেন, সেগুলো উপেক্ষা করতে শুরু করেন, তাহলে সেটা একটা ইঙ্গিত হতে পারে। তিনি হয়তো আগের মতো আর খোলামেলা কথা বলেন না, সহজ বিষয়েও বিরক্ত হন বা অযথা রেগে যান।
অনলাইন ব্যবহারে গোপনীয়তা
হঠাৎ ফোনে পাসওয়ার্ড দেওয়া, ফোন লুকিয়ে ব্যবহার করা বা কল এলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া যদি নিয়মিত হতে থাকে, তবে বিষয়টি সন্দেহজনক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত সময় দেওয়া, ইনবক্স বা চ্যাট লুকিয়ে ফেলা, হঠাৎ নতুন অ্যাপ ইনস্টল করা এসবও লক্ষণ হতে পারে।
মাঝে মাঝে আপনি দেখতে পাবেন, তিনি ফোনে হাসছেন, কিন্তু আপনাকে জানাতে চাচ্ছেন না কার সঙ্গে কথা বলছেন।
ভাষার পরিবর্তন
পরকীয়ায় জড়ালে অনেক সময় একজন মানুষের শরীরী ভাষা বদলে যায়। যেমন: চোখে চোখ রাখার অভ্যাস কমে যায়। শরীরিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলেন বা আগ্রহের ঘাটতি দেখা যায়। আপনার উপস্থিতিতে অস্বস্তি বা মানসিক দূরত্ব দেখা দেয়।
হঠাৎ করে নিজের সাজ-পোশাকে অতিরিক্ত মনোযোগ
স্বামী হঠাৎ নতুন পোশাক, পারফিউম বা সাজসজ্জা নিয়ে আগ্রহী হন। অথচ আপনার বা সংসারের জন্য তা করছে না, তবে সেটি লক্ষ্য করার মতো বিষয়। বাইরে কারও মন জয় করতে নিজের লুক বা স্টাইলে হঠাৎ পরিবর্তন দেখা দেয়।
ঘরের প্রতি উদাসীনতা
পরকীয়ায় জড়ালে অনেক সময় পুরুষের সংসারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। আগে যারা পরিবারের ছোটখাটো ব্যাপারে উৎসাহী ছিলেন, তারা হঠাৎ সবকিছু এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। সন্তানদের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। পরিবারের সময়টুকু যতটা সম্ভব এড়িয়ে বাইরে সময় কাটান।
অযৌক্তিক ব্যস্ততা
হঠাৎ কাজের অজুহাতে বাইরে থাকা, অফিসের কাজ বলে রাত করে ফেরা, ছুটির দিনেও “ব্যস্ত” থাকা ইত্যাদি কিছু একটা আড়াল করার ইঙ্গিত হতে পারে। এ ধরনের অজুহাত যখন অতিরিক্ত হতে থাকে, তখন সন্দেহ করার মতো অবস্থা তৈরি হয়।
অপ্রয়োজনীয় খরচ
পরকীয়ায় জড়ালে অনেকে গোপনে উপহার কে
কিনেন। হোটেলে খরচ করেন বা কাউকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেন। স্বামীর ব্যাংক বা মোবাইল ট্রান্সজ্যাকশনে অস্বাভাবিক খরচ দেখা গেলে সেটিও লক্ষ্য করুন।
যা করবেন
সন্দেহের বশে কোনো আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত না নিয়ে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন। প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করলে সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে। তাই
আগে ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন সত্যি কিছু ঘটছে কি না। সময় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন। সম্পর্ক ঠিক রাখতে চাইলে দাম্পত্য পরামর্শদাতার সাহায্য নিন। যদি সত্যিই প্রমাণ পান, তবে আত্মসম্মান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন।