বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় এনার্জি ড্রিংক এমন এক পানীয়, যা খেলে সহজেই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠা যায়। এসব পানীয়কে অনেকেই মনে করেন নিরাপদ। আদতে কি এনার্জি ড্রিংক নিরাপদ বা স্বাস্থ্যকর?
এনার্জি ড্রিংকে থাকে চিনি। নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে কেবল এই একটি উপাদানের জন্যই। আর্টিফিশিয়াল সুইটনার বা কৃত্রিম চিনি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। যেকোনো পানীয়ে মিষ্টতা আনার জন্য অন্য কোনো কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করা হলে তাতেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এনার্জি ড্রিংকে আরও থাকে ক্যাফেইন। উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন মারাত্মক ক্ষতির কারণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য যতটা ক্যাফেইন নিরাপদ, উঠতি বয়সের একটি ছেলে বা মেয়ের জন্য তা নিরাপদ নয়। এনার্জি ড্রিংকে থাকা আরও কিছু রাসায়নিক উপাদানের কারণেও স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
হৃৎপিণ্ডের যত ঝুঁকি
অতিরিক্ত পরিমাণে এনার্জি ড্রিংক খেলে এতে থাকা ক্যাফেইনের কারণে হৃৎপিণ্ডের গতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কখনো কখনো ব্যাহত হতে পারে হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ। তাই অতিরিক্ত এনার্জি ড্রিংক খাওয়া কখনোই উচিত নয়। পরিমাণে খুব বেশি না হলেও নিয়মিত এসব পানীয় খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ে। পরবর্তী সময়ে হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যাঁদের পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে এনার্জি ড্রিংক।
শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি
ক্যাফেইনের কারণে কারও কারও তীব্র মাথাব্যথা হয়। অন্যদিকে আবার নিয়মিত এনার্জি ড্রিংক খেলে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে বাড়তে পারে স্ট্রোক এবং দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের আশঙ্কাও। প্রিজারভেটিভের উপস্থিতির কারণেও কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
ঘুমের ব্যাঘাত ও মানসিক বিপর্যয়
অতিরিক্ত পরিমাণে এনার্জি ড্রিংক খেলে এর ক্যাফেইনের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আবার কম মাত্রায় নিয়মিত খেলেও ক্যাফেইন থাকার কারণে এই পানীয়ের প্রতি নির্ভরশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। বিষণ্নতা, অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তার সঙ্গেও এনার্জি ড্রিংকের যোগসূত্র পাওয়া গেছে গবেষণায়।
মাঝেমধ্যে অল্প এনার্জি ড্রিংক খেলে ক্ষতি নেই। তবে তা নিয়মিত কিংবা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। তাতেই বাড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষ করে খেয়াল রাখা প্রয়োজন, ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে একটি বোতল বা ক্যানের অর্ধেকটার বেশি না খাওয়াই ভালো। ১২ বছর বয়সের নিচের বয়সীদের এসব পানীয় একেবারেই দেওয়া উচিত নয়। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের সুগার অন্যান্য অনেক খাবারের চেয়ে অনেক দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এই পানীয়। যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাদের এ ধরনের পানীয় খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।