অনেকে মেয়েই বিয়ের কয়েক মাস বা বছরের মধ্যেই আগের তুলনায় ওজন বাড়িয়ে ফেলেন। পরিবার-পরিজনের মধ্যে এ নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা, এমনকি দুশ্চিন্তাও দেখা যায়। কেউ বলেন ‘স্বামীর সুখে মোটা হয়ে গেছে’, আবার কেউ বলেন ‘খেয়েদেয়ে আরাম করছে বলেই এমন’।
কিন্তু বিষয়টি শুধু খাবার বা আরামের সঙ্গে যুক্ত নয়, এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জটিল হরমোনজনিত ও মানসিক কারণ। বিয়ের পরে মেয়েদের ওজন বাড়ার প্রকৃত কারণ কী এবং কীভাবে সচেতন হলে এই পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
১. হরমোনের পরিবর্তন
বিয়ের পর অনেক নারীর শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যে পরিবর্তন আসে। এতে মেটাবলিজম কমে যায়, যা ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
২. খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন
বিয়ের পর অনেক নারী পরিবারে নতুন পরিবেশে যান, যেখানে খাওয়া-দাওয়ার ধরন বদলে যায়। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা ভারী খাবারের কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
৩. শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি
বিয়ের পরে অনেক নারী কর্মজীবন থেকে গৃহবধূ হয়ে যান। এতে দৈনিক গতিশীলতা কমে যায়, আর নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীরে চর্বি জমে।
৪. মানসিক চাপ ও অনিয়মিত ঘুম
নতুন সংসার, দায়িত্ব ও সম্পর্কের মানসিক চাপে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোন বাড়ে, যা শরীরে চর্বি জমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। ঘুমের ব্যাঘাতও ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
৫. গর্ভধারণের প্রস্তুতি বা গর্ভধারণ
বিয়ের কিছুদিন পর গর্ভধারণ, বা তার জন্য হরমোন থেরাপি ও ওষুধ গ্রহণের কারণেও মেয়েদের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
কীভাবে স্মার্ট থাকবেন
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন (হাঁটা, ইয়োগা, ফ্রি হ্যান্ড)।
খাদ্যতালিকায় কম ক্যালরির স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা সময়মতো বিশ্রাম নিন।
শরীরের পরিবর্তনকে নেতিবাচক না দেখে বুঝে শুনে গ্রহণ করুন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বিয়ের পর ওজন বাড়া কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়, বরং এটি শরীরের মানসিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তবে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে সহজেই এই পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সবচেয়ে বড় কথা, শরীরের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াই আত্মবিশ্বাসী জীবনের মূল চাবিকাঠি।