• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মুহররম ১৪৪৬

পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে, সন্তানকে কীভাবে সামলাবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে, সন্তানকে কীভাবে সামলাবেন
ছবি: সংগৃহীত

অভিভাবকের জন্য সন্তানের পরীক্ষার ফলাফলের দিনটি হয় অনেক প্রতীক্ষার। দিনটি কাটে উত্তেজনায় ও আবেগের মধ্য দিয়ে। কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে যখন বাস্তবতার মিল হয় না, অর্থাৎ সন্তানের ফলাফল খারাপ হয়, তখন হতাশা, রাগ বা দুশ্চিন্তা স্বাভাবিকভাবেই ঘিরে ধরে। তবে এই মুহূর্তে অভিভাবকের দায়িত্ব শুধু প্রতিক্রিয়া দেখানো নয়, বরং সন্তানকে সঠিকভাবে মানসিকভাবে সামলানো এবং উৎসাহ দেওয়া।

সন্তান যদি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না করে, তখন তাকে সঠিকভাবে সামলানো উচিত। আর এর জন্যে যা করবেন_

নিজেকে আগে নিয়ন্ত্রণ করুন
সন্তানের ফল খারাপ হওয়ার পর প্রথমেই অভিভাবকের উচিত নিজের আবেগ সামলানো। হঠাৎ রাগ করে কথা বলা, তুলনা করা বা চিৎকার করলে তা সন্তানকে আরও মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়। মনে রাখতে হবে, আপনার প্রতিক্রিয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ আত্মবিশ্বাসকে গড়ে তুলতেও পারে, আবার ধ্বংসও করতে পারে। 

সন্তানকে তুলনা করবেন না
সন্তানকে তার বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করবেন না। এ ধরনের কথায় সন্তানের আত্মবিশ্বাস ভেঙে পড়ে। সে নিজেকে দুর্বল, ব্যর্থ এবং অপ্রয়োজনীয় মনে করতে পারে। সন্তানকে ভেঙে না পড়ে নতুনভাবে চেষ্টা করার জন্য অনুপ্রাণিত করুন।

সন্তানের অনুভূতিকে গুরুত্ব দিন
পরীক্ষার খারাপ ফলের পর সন্তান নিজেও অনেক লজ্জিত ও হতাশ থাকে। তার মনে নানা ভয়, দুশ্চিন্তা এবং অপরাধবোধ জমে। এমন সময় ওর সঙ্গে সময় কাটান, পাশে বসুন। মন খুলে কথা বলুন। এই বোঝাপড়ার জায়গা থেকেই সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে।

কারণ খুঁজুন—বিনা দোষারোপে

পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ার পেছনে কারণ কী—সেটি খুঁজে বের করাটা গুরুত্বপূর্ণ। হতে পার পড়ার সময়ের সঠিক ব্যবহার হয়নি, অতিরিক্ত মোবাইল বা গেম, বিষণ্নতা বা মনোযোগের অভাব, পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া, ভুল প্রস্তুতির কৌশল।সন্তানের সঙ্গে বসে খোলামেলা আলোচনায় এর কারণ বের করুন।

সান্ত্বনা ও অনুপ্রেরণা দিন

পরীক্ষার ফল খারাপ হলেও জীবন থেমে থাকে না। এটিই সন্তানকে বুঝাতে হবে। উদাহরণ দিন— অনেক সফল মানুষ একসময় পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন। ব্যর্থতা মানেই শেষ নয়, বরং নতুন করে শুরু করার সুযোগ। নিজের ভুলগুলো চিনে নেওয়া মানেই তা সংশোধনের প্রথম ধাপ। মোট কথা, তাকে ইতিবাচক মনোভাব শেখান।

ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করে এগিয়ে যান

সন্তান যদি সব বিষয়ে দুর্বল হয়, তাহলে একবারে সব ঠিক করতে বলবেন না। এতে সে চাপ অনুভব করবে। বরং ছোট ছোট লক্ষ্যে ভাগ করলে কাজ সহজ ও ফলপ্রসূ হয়।

সন্তানের পাশে থাকুন

অনেক বাবা-মা কেবল ভালো ফলাফলে সন্তানের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু সন্তান সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা ও ভরসা চায় তখনই, যখন সে ব্যর্থ হয়। এই সময় পাশে থাকলে আপনি তার জীবনে একজন সত্যিকারের ‘বন্ধু অভিভাবক’ হয়ে উঠবেন।

প্রয়োজনে সহায়তা নিন
সন্তান যদি একাধিকবার খারাপ ফল করে বা মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়ে, তবে স্কুলের শিক্ষক, কাউন্সেলর বা মনোবিজ্ঞানীর সঙ্গে কথা বলুন। অনেক সময় একজন পেশাদার শিশুর সমস্যার গভীরে গিয়ে কার্যকর সমাধান দিতে পারেন।

মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহারে নজর দিন

অনেক শিশুর পড়াশোনায় মনোযোগ না দেওয়ার পেছনে কারণ মোবাইল বা ইন্টারনেট আসক্তি। তাই সময়মতো মনিটর করুন কতক্ষণ স্ক্রিন টাইম পাচ্ছে, কী কী অ্যাপে সময় কাটাচ্ছে, পড়াশোনার সময় যেন মোবাইল দূরে থাকে। কঠোর নিষেধাজ্ঞার বদলে যুক্তিসহকারে নিয়ম তৈরি করলে সন্তান তা মানতে বেশি আগ্রহী হয়।

ভালোবাসার স্পর্শ দিন

পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলেও একটি আলিঙ্গন,  আদরের কথা সন্তানের মানসিক আঘাত অনেকটাই কমাতে পারে। কঠোরতা নয়, দায়িত্বশীল সহানুভূতি দিয়েই গড়ে তুলুন সন্তানের আত্মবিশ্বাস।

Link copied!