• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২, ২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন
ছবি: সংগৃহীত

শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেক বাবা-মার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যখন বাচ্চা নিয়মিত মলত্যাগ করতে পারে না বা মল শক্ত ও শুষ্ক হয়, তখন তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এটি শিশুর পেট ব্যথা, অস্বস্তি, ক্ষুধামান্দ্য এবং মেজাজ খারাপ হওয়ার মতো সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা সহজেই সমাধান করা সম্ভব।

কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণসমূহ
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য চেনার কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো, সপ্তাহে ২ বার বা তার কম মলত্যাগ করা, মল শক্ত, শুষ্ক ও বড় আকারের হওয়া, মলত্যাগের সময় ব্যথা হওয়া, পেটে ফাঁপা বা ব্যথা অনুভব করা, মল চেপে রাখার প্রবণতা (যেমন দাঁত কটমট করা, বসে থাকা, পা মুছড়ানো ইত্যাদি), কখনো কখনো মল ধরে রাখতে না পারা বা কাপড়ে মল লেগে যাওয়া।

কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ
বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক কারণে হতে পারে, যেমন— অপর্যাপ্ত পানি পান, কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, নিয়মিত মলত্যাগ না করা বা চেপে রাখা, 
খাবারের পরিবর্তন বা ডায়েট চেঞ্জ, পটিতে প্রশিক্ষণকালীন মানসিক চাপ, শারীরিক ব্যায়ামের অভাব, দুধ বা দুধজাত খাবারের আধিক্য, কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে করণীয়

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ানো
বাচ্চার খাদ্যতালিকায় বেশি করে আঁশ (fiber) যুক্ত খাবার যুক্ত করুন। যেমন—শাকসবজি (পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া, গাজর), ফলমূল (পেঁপে, আপেল, নাশপাতি, কলা), গোটা শস্য ও ভাত, চিড়া, ওটস, বা হোলগ্রেইন সিরিয়াল এবং আঁশ পাচনতন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে এবং মল নরম করে।

পর্যাপ্ত পানি পান
বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পানি পান করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। পানি মলকে নরম রাখতে সাহায্য করে। গরমকালে ও বেশি খেলাধুলার পর আরও বেশি পানি দরকার হয়।

সঠিক টয়লেট অভ্যাস গড়ে তোলা
বাচ্চাকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে টয়লেটে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, বিশেষ করে খাওয়ার ১৫-৩০ মিনিট পর। তাকে চাপ না দিয়ে ধীরে ধীরে এই অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করুন।

খেলাধুলা ও শরীরচর্চা
নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলা হজমে সাহায্য করে। বাচ্চাকে সক্রিয় থাকতে উৎসাহ দিন, যাতে পরিপাকতন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করে।

দুধ ও দুধজাত খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ
অনেক সময় অতিরিক্ত দুধ বা চিজ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যায়। যদি মনে হয় দুধ খাওয়ার পর সমস্যা হচ্ছে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে দুধের পরিমাণ কমাতে পারেন বা বিকল্প ভাবতে পারেন।

মানসিক চাপ এড়ানো
অনেক শিশু মানসিক অস্বস্তির কারণে মল ধরে রাখে। তাকে উৎসাহ দিন, ভয় না দেখিয়ে সহযোগিতার মনোভাব দেখান। তার অনুভূতির প্রতি যত্নবান হোন।

চিকিৎসকের পরামর্শ কখন নেবেন?

কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে, পায়খানা করার সময় রক্ত গেলে, তীব্র পেট ব্যথা হলে, বাচ্চা একদমই খেতে না চাইলে বা অতিরিক্ত দুর্বল দেখালে চিকিৎসক প্রয়োজনে হালকা ল্যাক্সেটিভ বা ওষুধ দিতে পারেন। তবে কখনোই নিজে থেকে ওষুধ শুরু করবেন না। সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব। ধৈর্য, যত্ন আর নিয়ম মেনে চললেই শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক হজম নিশ্চিত করা যায়।

Link copied!