ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুবই অস্বস্তিকর সমস্যা। হঠাৎ করে ডায়রিয়া শুরু হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং জটিলতা দেখা দিতে পারে। ডায়রিয়া হলে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ না নিলে শরীরে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) দেখা দিতে পারে, যা জীবনঘাতীও হতে পারে। তাই হঠাৎ ডায়রিয়া হলে কী করা উচিত, কী খাবেন আর কোন লক্ষণে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তা জানা অত্যন্ত জরুরি। হঠাৎ ডায়রিয়া হলে প্রাথমিক অবস্থায় যা করবেন_
ওরস্যালাইন পান করুন
ডায়রিয়ায় সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো পানিশূন্যতা। তাই সঙ্গে সঙ্গে ওরস্যালাইন খাওয়া শুরু করুন। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর এক গ্লাস ওরস্যালাইন খেতে হবে। এক প্যাকেট স্যালাইন এক লিটার পানিতে গুলে নিন। শিশুদের জন্য বয়স ও ওজন অনুযায়ী মাত্রা কমাতে হবে।
পরিষ্কার ও সেদ্ধ পানি পান করুন
বেশির ভাগ ডায়রিয়া হয় দূষিত পানি বা খাবার খাওয়ার কারণে। তাই শুধু সেদ্ধ বা বিশুদ্ধ পানি পান করুন। চাইলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে রাখুন এবং ছোট ছোট চুমুক দিয়ে খান।
হালকা খাবার খান
পেট খালি রাখলে আরও দুর্বল হয়ে পড়বেন। তাই সেদ্ধ ভাত, সাদা খিচুড়ি, কলা, আলু, টোস্ট বিস্কুট ইত্যাদি হালকা খাবার খান। মসলা বা তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
ডায়রিয়ার সময় দুধ বা দুধজাত খাবার খেলে পেটে গ্যাস, ফাঁপা ও ব্যথা বাড়তে পারে। তাই সাময়িকভাবে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার বন্ধ রাখুন।
বিশ্রাম নিন
ডায়রিয়া হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। অতিরিক্ত চলাফেরা করলে শরীরে পানিশূন্যতা আরও বাড়তে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে শরীর দ্রুত সুস্থ হয়।
যেসব লক্ষণ দেখলে ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি
২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পাতলা পায়খানা বন্ধ না হওয়া, রক্ত বা কষযুক্ত পায়খানা হওয়া, বারবার বমি হওয়া, জ্বর, তীব্র পেট ব্যথা, প্রস্রাব কমে যাওয়া বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়া, শিশু বা বৃদ্ধ রোগী অতিরিক্ত ক্লান্ত, চুপচাপ বা অসাড় হয়ে পড়লে, চোখ দেবে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ত্বক টান টান হয়ে যাওয়া—এগুলো পানিশূন্যতার লক্ষণ। এই লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
ডায়রিয়া যা করা উচিত নয়
পেটে ব্যথা কমানোর জন্য অযথা পেইনকিলার খাবেন না, ডায়রিয়া কমাতে নিজের ইচ্ছামতো অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না, বাইরের রাস্তার খাবার বা অপরিচ্ছন্ন পানীয় গ্রহণ করবেন না, শরীর দুর্বল থাকলেও অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার খাবেন না। এসব কারণে ডায়রিয়া আরও বাড়তে পারে।
ডায়রিয়া সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়, তবে উপসর্গ জটিল হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।