রক্তশূন্যতা শিশুদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। রক্তশূন্যতার সবচেয়ে সাধারণ কারণ, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন না থাকা। শিশুদের মধ্যে বয়সের একটি নির্দিষ্ট সময়ে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়। শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিনের অভাব থাকে, তখনই তাকে রক্তশূন্যতা বলা হয়। শিশুর রক্তশূন্যতা তা শারীরিক বৃদ্ধি যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি শিশুর মেধা, বুদ্ধি, আচার-আচরণেও বিরূপ প্রভাব পড়ে।
শিশুর রক্তশূন্যতা কেন হয়
- আয়রন বা অন্যান্য উপাদানের ঘাটতিজনিত কারণে। দুই বছরের কম বয়সী শিশু এবং বয়ঃসন্ধিকালে
- শিশু অ্যানিমিয়ার প্রধানত আয়রন ঘাটতিজনিত কারণে হয়ে থাকে।
- ফলিক এসিড ও বি-১২ ভিটামিনের অভাবে
- লোহিতকণিকা যদি ভেঙে যায়
- দীর্ঘমেয়াদি অসুখে ভোগা শিশু রক্তস্বল্পতায় পড়ে।
- রক্তপাতসংক্রান্ত কারণ
নবজাতক অবস্থায় শিশু উচ্চ মাত্রার হিমোগ্লোবিন নিয়ে জন্ম নেয়। তবে ধীরে ধীরে দুই মাস বয়সের দিকে তা কমে যেতে থাকে। এটা শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এ সময় মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। প্রয়োজনমতো লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হতে দরকার আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি১২। শিশুর খাদ্যে এসবের অভাব থাকলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
কারা রক্তশূন্যতায় ভোগে
- জন্মের নির্ধারিত সময়ের আগে যেসব নবজাতক জন্মগ্রহণ করে, তাদের রক্তশূন্যতা হওয়ার প্রবণতা
- বেশি থাকে
- অপরিণতভাবে জন্ম নেওয়া—লো বার্থওয়েট (জন্ম সময়ের ওজন ২৫০০ গ্রাম বা তার নিচে)
- কৃমির সংক্রমণ অনেক দিন ধরে থাকলেও শিশু রক্তশূন্যতায় ভোগে
- ছয় মাস বয়স থেকে শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি পরিপূরক খাবার না খাওয়া শিশুদেরও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
- যেসব বাড়ন্ত শিশু অন্যান্য খাবারের চেয়ে দুধ বেশি পান করে, তাদের আয়রনের অভাবজনিত রক্তাল্পতার ঝুঁকি থাকে।
কীভাবে বুঝবেন শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছেন
- যদি শিশুর ত্বক, ঠোঁট, হাত-পায়ের তালুতে ফ্যাকাশে ভাব দেখা যায়
- দুর্বলতা অনুভব করে
- অল্পতে হাঁপিয়ে যায়
- বুক ধড়ফড় করলে
- মেজাজ খিটখিটে হলে
তবে কারও কারও ক্ষেত্রে জন্ডিস, কালো রঙের প্রস্রাব, একটুতেই রক্তপাত সমস্যা, পেট ধীরে ধীরে ফুলে যাওয়া, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া, সারা গায়ে লালচে দাগ এসব সমস্যাও হতে পারে।
শিশুর রক্তশূন্যতা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।