• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট, ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৬

কাঠগড়ায় দীপু মনিকে নিয়ে যা বললেন কলিমুল্লাহ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৭:২৫ পিএম
কাঠগড়ায় দীপু মনিকে নিয়ে যা বললেন কলিমুল্লাহ
নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ও দীপু মনি। ছবি: কোলাজ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উন্নয়নকাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠাটির সাবেক উপাচার্য (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তাকে গ্রেপ্তারের পর ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় কাঠগড়ায় বিচারকের সঙ্গে কথোপকথন হয় কলিমুল্লাহর, যেখানে তিনি দাবি করেন, দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন অন্যায় আবদার করতেন। 

এদিন বিকাল ৪টার দিকে তাকে দুদকের সাদা মাইক্রোবাসে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে সরাসরি আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। পরে দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহজ বিন ইসলাম তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এরপর ৪টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। পরে ৪টা ২২ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। তখন কমিমুল্লাহ কাঠগড়ার সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় আসামিপক্ষে জামিন ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করা হয়।

এ সময় শুনানিতে আইনজীবী শাহনাজ আক্তার বলেন, তিনি কোনো অর্থ আত্মসাৎ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে বিধি মোতাবেক কাজ করেছেন। তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে কোনো কাজ করেননি। বয়স বিবেচনায় যেকোনো শর্তে জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কোন সালে ভিসি হয়েছেন? উত্তরে কমিমুল্লাহ বলেন, তৎকালীন সরকার আমাকে ২০১৭ সালে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়।

তখন বিচারক ফের বলেন, আপনি তো ফুলটাইম ঢাকায় থাকতেন। আপনি ১৩৫২ দিনের মধ্যে ১১১৫ দিন ঢাকায় থেকেছেন। তখন তিনি বলেন, দীপু মনি অন্যায় আবদার করতেন। এটা মেনে না নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়েছে। আমি ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি। তার বিরুদ্ধে আমি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীপু মনি এগুলো ছড়িয়েছেন।

তখন বিচারক বলেন, আপনি ও আপনার মা একই নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন? তখন তিনি বলেন, তিনি (তার মা) মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজি ছিলেন। এ জন্য সরকার নিয়োগ বোর্ডে সদস্য করেন।

তখন বিচারক বলেন, আপনি কি ভিসি, বিভাগীয় প্রধান ও ডিন ছিলেন? তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমিই প্রথম না। আমার আগের ভিসির ধারাবাহিকতায় রক্ষায় এসব দায়িত্বে ছিলাম। বিশেষ পরিস্থিতিতে এ দায়িত্বে থাকতে হয়েছে। বিচারক জানতে চান, চার বছরে উন্নয়ন খাতে কোনো টাকা পেয়েছেন? তখন তিনি বলেন, আমার আগের ভিসি নুর নবীর সময় ৯৯ কোটি টাকার কাজ চলমান ছিল। আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজ চলমান রেখেছি।

তখন তিনি আরও বলেন, চাকরি বাণিজ্য বন্ধ করেছিলাম। তখন দুদকের আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি বলেন, তিনি ঢাকায় থাকতেন। টক শো করতেন নিয়মিত। উনি কিভাবে ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করেন? তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমি রাতের বেলা টক শো করতাম। তখন বিচারক জানতে চান, তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কি না? তখন দুদক জানায়, অন্য কোনো মামলা নেই। তখন বিচারক আসামির উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, সেটা তদন্ত হলে পুরাটা বেরিয়ে আসবে। তখন কলিমুল্লাহ বলেন, আমি কোনো চিঠিপত্র পায়নি। আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকা হয়নি। সকালে বাসা থেকে আমাকে পুলিশ নিয়ে আসছে। এক পোশাকে একাই চলে এসেছি।
তখন বিচারক বলেন, কবরে আর জেলখানায় একাই যেতে হবে। দুনিয়া থেকে যখন যাবেন সঙ্গে কেউ যাবেন না। যারা দুর্নীতি করে তারা কবরেও একা, জেলখানাতেও একা যাবে। আপনি কী করেছেন তা আলিমুল গায়েব জানেন, আপনিও জানেন। কিছুদিন পর দুদক জানবে। আপনাকে জেলখানায় যেতে হবে। আপনি কারাবিধি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। কোনো ওষুধপত্র প্রয়োজন হলে আপনাকে দেওয়া হবে। এরপর বেলা ৪টা ৪২ মিনিটে তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।  সূত্র: যুগান্তর

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!