এখন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড অর্থাৎ অস্কারে ভারতীয় সিনেমার যাতায়াত নিত্য। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃতও হচ্ছে দেশটির চলচ্চিত্র। কিন্তু প্রথমবার অস্কারের মতো একটি আসরে ভারতের হয়ে ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট’ পুরস্কার জিতেছিলেন যিনি, তিনি ছিলেন সত্যজিৎ রায়। বাঙালির আদরের ‘মানিকদা’র সে কীর্তি গড়ার দিনটি ছিল ১৯৯২ সালের আজকের এই দিনে (৩০ মার্চ)।
নন্দিত অপু ট্রিলজি স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় তখন জীবন সায়াহ্নে ৭০ বছর বয়সে। অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন কলকাতার একটি হাসপাতালে। লস অ্যাঞ্জেলসের ডলবি থিয়েটারের মঞ্চে কিংবদন্তি নায়িকা অর্ডে হেপবার্ন তাঁর নাম ঘোষণা করে বলেন যে, সত্যজিৎ রায় নির্মিত বিরল মানবিক চলচ্চিত্রসমূহ বিশ্ব চলচ্চিত্রের সম্পদ। তিনি নির্মাতা ও দর্শক উভয়কেই সিনেমামুখী করেছেন।
পুরস্কার হাতে নিয়ে হাসপাতালের বিছানা থেকে সত্যজিৎ রায় তার অনুভূতি জানান। তিনি প্রথমে অস্কার অ্যাকাডেমির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এরপর বলেন যে, জীবনের শুরু থেকে তিনি আমেরিকান সিনেমা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। ফিল্ম মেকিং শিখতে কাজে এসেছে এসব ছবি। মানুষকে আনন্দ দিতে সেই সঙ্গে সিনেমাকে ভালোবাসতে শেখায় আমেরিকান সিনেমা।
এরপরের মাস অর্থাৎ ১৯৯২ সালের এপ্রিলের ২৩ তারিখ চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ ঘটে। তিনি আগেই বহু প্রাচ্য ও পাশ্চাতের পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। কিন্তু বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে কুলীন আসর খ্যাত অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড আসর তার কাজ নিয়ে নিরব ছিল। সত্যজিৎ রায়কে পুরস্কৃত করা ছিল সিনেমার একটি বিশেষ জনরার প্রতি সম্মাননা জানানো। এর সঙ্গে জড়িত ভারতবর্ষ এবং আরও বিশেষ করে বাঙালির সংস্কৃতি। তাই বলা যায়, ১৯৯২ সালের ৩০ মার্চ ছিল সত্যজিতের বিশ্বজিৎ হওয়ার দিন।



































