• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নতুন বছর থেকেই শুরু হোক সাশ্রয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩, ০৯:২০ পিএম
নতুন বছর থেকেই শুরু হোক সাশ্রয়
সঞ্চয়ের অভ্যাস স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হয় । ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন খরচের তালিকা ছোট করার। কিন্তু সংসার খরচ, বাড়িভাড়া, যাতায়াত খরচ, সামাজিকতা, চিকিৎসা খাতে খরচ ইত্যাদি সব মিলিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন প্রতি মাসে। প্রতিদিনই একবার করে ভাবেন, সামান্য কিছু টাকা অন্তত আলাদা করে রেখে দেবেন, ভবিষ্যতে বড় কোনও খরচ সামলানোর জন্য। সে স্বপ্ন পূরণ করার জন্য কিছুটা হলেও কৌশলী হতে হবে আপনাকে। চলুন জানা যাক কীভাবে কমাবেন খরচের খাত।

খরচের তালিকা করুন
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই বাজারে প্রতিদিন আপনার হাত দিয়ে যা খরচ করছেন তার একটি তালিকা অবশ্যই করুন। এটির জন্য কাগজ-কলম নিয়ে আলাদা করে বসার প্রয়োজন নেই। কাজের ফাঁকে মোবাইলের নোটপ্যাডে এই তালিকা করে ফেলুন। খেয়াল করলেই দেখবেন, প্রতিদিন ১০০টাকার নোট ব্যবহার করছেন খরচের জন্য। 

মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত কতবার ১০০টাকার নোট খরচ করলেন সেটি লিখুন। দেখবেন, মাস শেষে আপনার ১০০ টাকা খরচের যোগফল বেশ বড়ই হবে। এবং অনাবশ্যক খাতে কতবার এই নোট খরচ করেছেন তা বের করতে সুবিধা হবে। এটি ভবিষ্যতে আপনাকে অনেক খরচ কমাতে সহায়ক হবে।

গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার
আজকাল বেশিরভাগ মানুষই সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করেন। গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে দেখা যায় আমার অনেক বেশি অসচেতন থাকি। এই ভুল মোটেও করা যাবে না। কারণ এই দুইটি খাতেও বেশ বড় অংকের একটি খরচ বেরিয়ে যায়। বাড়িতে ছোটদেরও শেখান গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে। তাহলে এখান থেকে বেঁচে যাবে কিছুটা খরচ।

ব্র্যান্ডের পণ্য এড়িয়ে চলা
সংসারের সমস্ত প্রয়োজনীয় খরচ নামীদামি প্রতিষ্ঠান বা দোকান থেকে না কিনে সাধারণ কোনও বাজার থেকে কেনার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে ব্রান্ডের পণ্য আর সাধারণ পণ্যের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। এছাড়াও যে খাবারগুলো আপনি ব্রান্ডের পণ্য ভেবে অকৃষ্ট হচ্ছেন, সেগুলো চাইলেই ঘরে তৈরি করা যায়। এবং সেটিই করার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রেও সঞ্চয় করতে পারবেন কিছু অর্থ।

ইন্টারনেট খরচ কমানো
ইন্টারনেট ছাড়া একটি দিনও ভাবা যায় না এখনকার সময়ে। হিসাব করলেই দেখবেন অনেকগুলো টাকা খরচ করে ফেলেছেন মোবাইলে ডাটা কানেকশন করতে গিয়ে। অনেক সময় বিভিন্ন সময় নানাকিছু ডাউনলোড করতে গেলেই চট করে শেষ হয়ে ডাটা কানেকশন। সঙ্গে সঙ্গে আবারও নিতে হচ্ছে নেট সংযোগ। অন্যদিকে সমানতালে আপনার ঘরেও কিন্তু চলছে ব্রডব্যান্ডের লাইন। সুতরাং এক্ষেত্রে প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়ে যেকোনো একটি ব্যবহার করুন।

চিকিৎসা খরচ কমিয়ে আনুন
যত যাই বলি না কেনো, অসুস্থতার সঙ্গে কোনরকম হেরফের করা চলে না। ছোট-বড় যে অসুখই হোক, হাসপাতালে ছুটতে হয়। আর এই খাতে খরচের কথা বলে শেষ করা যাবে না। বিশাল অংকের এই খরচটি কিন্তু হুটহাটই এসে পড়ে। বুদ্ধি করলে খরচের তালিকা থেকে এই অর্থটিও কিন্তু বাদ দিতে পারেন আপনি। 

যেমন শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রাকৃতিক খাবার খান। নিয়ম করে শরীরচর্চাও কিন্তু অনেক ধরণের রোগবালাই থেকে রক্ষা করে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিন ফলমূল রাখুন পাতে। পুষ্টিকর খাবারই দিতে পারে আপনার সুস্থ শরীর। রোগের পেছনে অর্থ খরচ করার চেয়ে ঢের ভালো স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে ব্যয় করা।

ঘরের খাবার খান
ঘরের খাবার খাওয়ার চেয়ে বাইরের নানারকম মুখোরোচক খাবারের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় মন। এই মন ভরানো বাইরের খাবারে অতিরিক্ত খরচটুকু কমিয়ে ঘরে তৈরি খাবারে অভ্যস্ত হতে পারলে দেখবেন খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছে।

ক্লিনিং পণ্যের ব্যবহার 
ঘরের জীবাণুনাশক জিনিস ব্যবহারে ব্যয়বহুল পণ্য এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। এর পরিবর্তে হাতে কাছে থাকা ঘরোয়া উপাদানেই সমাধান করা যাবে পরিষ্কারের কাজটি। যেমন- ড্রেন পরিষ্কার করতে ভিনেগার ও বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণ দাগ, ফ্রিজ বা জানালার গ্লাস পরিষ্কার করতে লেবুর রস ব্যবহার করা যায়। এখান থেকে সংসারের খরচ কিছুটা হলেও কমবে।

 ব্যয়বহুল সৌন্দর্যপণ্য 
ত্বকের যত্নে দামি ক্রিম ব্যবহারে প্রলুব্ধ না হয়ে প্রাকৃতিকভাবে রূপচর্চায় অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিমাণে পানি পান ত্বকের অনেক সমস্যা কমিয়ে আনে। এছাড়া প্রতিদিনের কেনা সবজি বা ফল দিয়ে সেরে নিতে পারেন ত্বকের পরিচর্যা। তাহলে বাড়তি খরচ হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন। তাছাড়া প্রতিমাসের নির্ধারিত অর্থ থেকেই কিন্তু এই খরচটি করতে হয়।

প্রতিদিন কিছু টাকা সঞ্চয় করার ইচ্ছা থাকলে এই কয়েকটি টোটকা কাজে লাগাতে পারেন। অথবা চোখ কান খোলা রাখলেই দেখবে আরও কিছু উপায় বের করতে পেরেছেন।

Link copied!