ভেষজ উদ্ভিদগুলোর মধ্যে নিম প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার করে আসছে মানুষ। নিম গাছ সাধারণত ক্রান্তীয় অঞ্চলগুলোতে দেখা যায়, যেমন ভারত, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় নিম গাছ পাওয়া যায় । নিম গাছের পাতা, কান্ড, বাকল, ফল, মূল প্রতিটি অংশেরই সমান গুরুত্ব আছে তবে নিম গাছের পাতাটাই বেশি পরিমানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে । ত্বকের পরিচর্যা, সৌন্দর্য রক্ষায়, সর্দিকাশি,জ্বর, বিভিন্ন সংক্রমণ, কিডনি, লিভার ইত্যাদির সমস্যায় নিম পাতা বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে । চলুন আজ জেনে নেবো নিমপাতা কীভাবে ত্বকের উপকার করে-
ত্বকের ইনফেকশন দূর করে
নিমপাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাংগাল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান থাকায় এটি ত্বকের ইনফেকশন সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ব্যবহার
কয়েকটি নিম পাতা নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করতে হবে। পানি ছেঁকে গোসলের পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এ পানিতে গোসল করলে ত্বকের ইনফেকশন ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।
ব্রণ দূর করে
ত্বকের সিবাকাস গ্রন্থিতে অতিরিক্ত এবং ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া থেকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। নিমপাতা এগুলো সারিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ব্যবহার
নিমপাতা সেদ্ধ করে সে পানিতে একটি তুলার বল ডুবিয়ে পুরো মুখটা মুছে ফেলুন। আপনি মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্তভাব কমাতে চাইলে শশা-নিমের ফেসপ্যাক কিংবা নিম-টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
টোনার হিসেবে কাজ করে
প্রত্যহ ব্যবহার করলে নিম বলিরেখা এবং মুখের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। এটি মুখের কালচে ভাবও কমিয়ে আনে। ছেঁকে নেওয়া নিম পাতার পানি ব্রণের দাগ হালকা করে ত্বককে সুন্দর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার
নিমপাতা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং প্রতি রাতে মুখের ত্বকে লাগান। তৈলাক্ত ত্বক হলে এর সঙ্গে গোলাপ জল মেশাতে পারেন। পরের দিন সুন্দরভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
শুষ্ক ত্বকের জন্য
এটি ত্বককে নরম ও কোমল করে ত্বককে সুস্থ রাখে।
ব্যবহার
অল্প পরিমাণ নিমপাতার গুঁড়ো নিয়ে এতে কয়েক ফোঁটা জলপাই তেল যোগ করুন। এটি পুরো মুখে ভালোভাবে লাগান এবং কিছুক্ষণ রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন এ ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।
ব্ল্যাকহেড কমায়
নিম মুখের ব্ল্যাকহেড, হোয়াইটহেড এবং বড় রোমকূপের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ব্যবহার
নিম পাতা গুঁড়ার সঙ্গে কমলালেবু খোসার গুঁড়া মেশাতে হবে। দুই ধরনের গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এর সঙ্গে অল্প মধু, দুধ এবং টক দই মেশান। সপ্তাহে অন্তত তিনবার ব্যবহার করুন ভালো ফলাফলের জন্যে। আপনার শুধু ব্ল্যাকহেডের সমস্যা থাকলে আক্রান্ত স্থানে নিম তেল মালিশ করুন।