• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৬

ত্বক ফর্সাকারী গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন কতটা নিরাপদ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
ত্বক ফর্সাকারী গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন কতটা নিরাপদ
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে সৌন্দর্যচর্চায় ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য গ্লুটাথায়োন ইনজেকশনের ব্যবহার দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক তারকা এবং সৌন্দর্য সচেতন সাধারন মানুষও এই ইনজেকশন নিয়ে থাকেন। বিশেষ করে যারা দ্রুত ফর্সা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখেন। কিন্তু এই ইনজেকশন আদৌ কতটা নিরাপদ?

ত্বক উজ্জ্বলকারী ইনজেকশন কী
ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ইনজেকশন হলো গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন। গ্লুটাথায়োন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা স্বাভাবিকভাবে লিভার তৈরি করে এবং শরীরের কোষগুলোকে টক্সিন থেকে রক্ষা করে। গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন ত্বকে থাকা মেলানিন নামক রঙ উৎপাদনকারী উপাদানের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে ত্বক তুলনামূলক উজ্জ্বল ও ফর্সা দেখায়।

কেন মানুষ এটি গ্রহণ করে?
দ্রুত ফর্সা হতে চাওয়া, মেলানিনের মাত্রা কমিয়ে দাগছোপহীন ত্বক পাওয়া, রঙের অসমতা দূর করা, হাইপারপিগমেন্টেশন কমানোর জন্য এই ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। 

গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন কতটা কার্যকর?
অনেক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ ইনজেকশন নেওয়ার পর তাদের ত্বকে উজ্জ্বলতা এসেছে। তবে এই উজ্জ্বলতা স্থায়ী নয় এবং ইনজেকশন বন্ধ করলে ত্বক আবার আগের অবস্থায় ফিরেও যেতে পারে। তাই একে ‘স্থায়ী সমাধান’ বলা যায় না।

এই ইনজেকশন কতটা নিরাপদ 
এটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ভিন্ন মত রয়েছে। গ্লুটাথায়োন ইনজেকশন বিশ্বব্যাপী ত্বক ফর্সাকারী চিকিৎসা হিসেবে এখনো ‘FDA approved’ নয়। তাই এটি চিকিৎসকদের নজরদারিতে নিতে হয়। এই ইনজেকশনের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো_

অ্যালার্জি বা রিঅ্যাকশন
ইনজেকশন দেওয়ার পর চুলকানি, ফুসকুড়ি, বা অ্যানাফাইল্যাক্সিস (বিপজ্জনক অ্যালার্জি) হতে পারে।

লিভার ও কিডনি সমস্যার ঝুঁকি
অতিরিক্ত গ্লুটাথায়োন লিভারে চাপ ফেলে, কিডনিতেও দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা হতে পারে।

ত্বকে ফুসকুড়ি ও ব্রণ
অনিয়ন্ত্রিত ইনজেকশন ব্যবহার ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ বা চর্মরোগ সৃষ্টি করতে পারে।

ব্লিচিং ইফেক্ট
ত্বকের স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে গিয়ে ত্বক অসামঞ্জস্য রঙের হতে পারে।

স্নায়বিক সমস্যা
অতিরিক্ত গ্লুটাথায়োন স্নায়ু দুর্বল করে দিতে পারে, বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় ইনজেকশন নেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। কারণ গ্লুটাথায়োন ইমিউন সিস্টেমের ওপরও প্রভাব ফেলে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত কী
চর্ম বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ইনজেকশন নেওয়ার আগে পরামর্শ করা উচিত। বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), FDA বা আন্তর্জাতিক স্কিন কেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো ত্বক ফর্সাকারী ইনজেকশনকে এখনো পুরোপুরি নিরাপদ বলে ঘোষণা দেয়নি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি, খরচ ও ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এটি ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত। শুধুই ফর্সা নয়—স্বাস্থ্যবান এবং পরিচ্ছন্ন ত্বকই আসল সৌন্দর্য।

Link copied!