ভাইরাসজনিত রোগের মধ্যে হাম একটি। প্যারামিক্সো ভাইরাসের কারণে রোগটি হয়। সাধারণত পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চাদের এ রোগ হয়। তাছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম তাদের তাদের ঝুঁকি থাকে। ছোঁয়াছে এই রোগে গর্ভবতী নারীদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। তাই কারো হাম হলে তাকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। হামের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। এ কারণে হাম হলে পরবর্তী সময়ে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অপুষ্টি, চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা, অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি, বিভিন্ন ধরনের মস্তিষ্কের সমস্যা এমনকি জ্বরসহ খিঁচুনিও হতে পারে।
হামের লক্ষণগুলো কী কী
কমিউনিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ঈশিকা চৌধুরী বলেন, হাম সাধারণত ৩টি পর্যায়ে হয়- প্রোডর্মাল পর্যায়, এক্সান্থন পর্যায় ও কম্বালসন পর্যায়। প্রোডর্মাল ফেইজে বাচ্চার জ্বর থাকে, এই জ্বর কারো ক্ষেত্রে মৃদু, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাই ফিভার হয়।
১০২-১০৩ এর কাছাকাছি জ্বর থাকে, বাচ্চার কাশি থাকে ও চোখ দিয়ে, নাক দিয়ে পানি, হাঁচি কাশি বাচ্চার থাকবে। এসব সমস্যা ২-৩ বা ৩-৪ দিন সময় থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কারো ৬-৭ দিনও থাকতে পারে ও একসঙ্গে শিশুর ক্ষুধামন্দা ও খাওয়ার অরুচি থাকতে পারে।
এরপর শুরু হয় এক্সান্থন পর্যায়। এই সময় র্যাশ দেখা দেয়। লাল বর্ণের বিচির মত র্যাশ হয়, যাকে ম্যাকুইলিপ্রপেল বলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন হয় যে একদম চামড়ার সঙ্গে মিশে যায় বা লাল লাল দানার মতো হয়। মুখ থেকে শুরু করে শরীরের উপরের অংশ, নিচের অংশ ও হাত-পায়ে তা ছড়িয়ে যায়।
কখনো কখনো রক্তক্ষরণ হয় এমন এক ধরনের র্যাশ হতে পারে যা সচরাচর হতে দেখা যায় না। যখন শিশুর র্যাশ সম্পূর্ণরূপে উঠে যাবে, এর ৪৮ ঘণ্টা পর বাচ্চার জ্বর কমে যায়। এই র্যাশগুলো আস্তে আস্তে ফেডিস হয়ে চামড়া থেকে চলে যাবে। এরকম ৬-৭ দিনের কাছাকাছি থাকে।
এরপর কম্বালসন পর্যায়। এক্ষেত্রে শিশুরা আস্তে আস্তে ভালো হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে হামের পর কাশি হয়। এই কাশি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকতে পারে। এগুলোই সাধারণত হামের লক্ষণ।
প্রতিরোধ করার উপায়
হামের জন্য দেশে অনেকগুলো টিকা প্রকল্প আছে। হামের জন্য মোট ৩টি টিকা আছে। এমআর ভ্যাকসিন, আর ভ্যাকসিন ইত্যাদি। এমআর ভ্যাকসিন বাচ্চাদের ৯ মাস বয়সে, আরেকটি দেওয়া হয় ১৫ মাস বয়সে।
সবার আগে জরুরি কাজ হলো লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।