খাদ্যের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীকে অনেক নিয়মকানুন মেনে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। পবিত্র রমজান মাসে আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে আর খাদ্যাভ্যাসে অনেক পরিবর্তন আসে। এ সময় দেখা যায়, অনেক ডায়াবেটিস রোগী অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারণ ডায়াবেটিসের সঙ্গে খাদ্য ও অন্যান্য রোগ ব্যবস্থাপনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই খাদ্যাভ্যাসের বিষয়েও সাবধানতা চাই। চলুন জেনে নিই রমজানে কেমন হওয়া উচিত ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যাভ্যাস।
খাদ্যগ্রহণ
- সাহ্রির শেষ সময়ের অল্প সময় আগে খাবার খেতে হবে। সাহ্রি বাদ দেওয়া যাবে না।
- ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ না করা উচিত। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার কেবল শর্করা, রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ায় তা নয়, বদহজম, পেপটিক আলসারের উপসর্গ করতে পারে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, যেন পানিশূন্যতা না হয়। প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই তালিকাভুক্ত করতে পারেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন।
- খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন। সঠিক ওজন ও ক্যালরির মাত্রা বজায় রাখুন।
- রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতেন, রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার সময় এবং ধরন বদলাতে হবে। প্রয়োজন হলে পুষ্টিবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে, ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় যথেষ্ট এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে। শর্করাজাতীয় খাবার সাহ্রির সময় খেতে হবে
ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা
- রোজাদার ডায়াবেটিস রোগীকে ঘনঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। গ্লুকোমিটারে রক্ত পরীক্ষা করলে রোজা ভাঙে না। প্রতিদিন বেশ কয়েকবার (কমপক্ষে তিনবার) রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেখা ভালো। শরীর খারাপ লাগলে অবশ্যই দেখতে হবে। রক্তের গ্লুকোজ ৪ মিলিমোলের কম বা ১৬ মিলিমোলের বেশি হলে রোজা ভাঙতে হবে।
- এ ছাড়া মাঝেমধ্যে রক্তচাপও মাপবেন। লবণাক্ত ও তৈলাক্ত খাবার বেশি খাওয়ার কারণে আর ঘুমের সময়সূচির পরিবর্তনে রক্তচাপের ওঠানামা হতে পারে। পানিশূন্য হচ্ছে কি না, বুঝতে পারবেন প্রস্রাবের পরিমাণ ও রং দেখে, আর জিব শুষ্ক ত্বক বিবর্ণ হলে।
ব্যায়াম ও পরিশ্রম
স্বাভাবিক শারীরিক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে, তবে খুব বেশি কঠোর শ্রম বা ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। আর তারাবির নামাজ পড়লে, তাকে শারীরিক শ্রম হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।