এডিস অ্যাজিপ্টি মশা ডেঙ্গু রোগের বাহক। এই মশার বিস্তারে ডেঙ্গু রোগও বেড়ে যায়। দেশজুড়ে এই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর সংখ্যাও। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে এই মশা বেশি বিস্তার বাড়ে। তাই সেই সময় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপও বাড়তে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, DEN-1, DEN-2, DEN-3 ও DEN-4 ভাইরাস থেকে ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায়। এই ৪টি ভাইরাসকে সিরোটাইপ বলা হয়। কারণ এই চারটি ভাইরাস পৃথক পৃথকভাবে অ্যান্টিবডিকে প্রভাবিত করে। এমনকি পৃথক পৃথক স্ট্রেনের দ্বারা চার বার ডেঙ্গি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে ব্যক্তি।
ছোট, গাঢ় রঙের ডেঙ্গু মশা বেশি উঁচুতে উড়তে পারে না। অন্য মশাদের তুলনায় ছোট আকারের হয় অ্যাডিস অ্যাজিপ্টি। এই ধরনের মশা সবচেয়ে বেশি কামড়ায় দুপুরের সময়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সূর্যদয়ের দুই ঘণ্টা পর থেকে সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগ পর্যন্ত ডেঙ্গু মশা সক্রিয় থাকে। রাতের সময় সাধারণত এই মশা কামড়ায় না। তবে যেসব অঞ্চলে রাতের সময় উজ্জ্বল আলো থাকে, সেখানে ডেঙ্গি মশা সক্রিয় থাকে।
সাধারণত খোলা জায়গায় অফিস, মল, ইন্ডোর অডিটোরিয়াম ও স্টেডিয়ামের ভিতরে এই মশা কামড়ানোর বেশি সম্ভাবনা থাকে। কারণ এখানে সব সময় উজ্জ্বল কৃত্রিম আলো ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক রশ্মি এখানে প্রবেশ করতে পারে না।
কোনও ব্যক্তিকে কামড়ানোর তিন দিন পর ডিম পাড়ে এই মশা। ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গির লার্ভা পূর্ণাঙ্গ মশার আকার ধারণ করে। জমানো পরিস্কার পানিতেই তাদের দ্রুত বংশ বিস্তার হয়।
এছাড়াও এই মশার জীবনকাল সংক্ষিপ্ত। একটি বয়স্ক মশা প্রায় ৩ সপ্তাহ জীবিত থাকে। বিশেষ করে গরমকালে জন্মায় এই মশা। শীত আসার আগেই এই মশার মারা যায়।
সংক্রমণের ৪ থেকে ৭ দিন পর ডেঙ্গির লক্ষণ প্রকাশ্যে আসে। এ সময় তীব্র জ্বর হয়। এ ছাড়াও মাথা ব্যথা, মাংসপেশী, হাড় ও গাঁটে ব্যথা, বমি, গা গোলানো, চোখে ব্যথা, ত্বকে লাল গোল গোল দাগ, গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলো দেখা যায়।