• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজশাহীতে আমের বাম্পার ফলনের আশা


রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩, ০৩:০০ পিএম
রাজশাহীতে আমের বাম্পার ফলনের আশা

রাজশাহীর আমবাগানগুলোতে মুকুলে মুকুলে ভরে উঠছে গাছ। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার মুকুল এসেছে সবচেয়ে বেশি। এ বছর বাম্পার ফলনের আশায় রয়েছেন চাষিরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত মৌসুমে শীত ও কুয়াশা তুলনামূলক কম হওয়ায় মুকুলের ক্ষতি অনেকটাই কমেছে। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া ও ক্রমেই তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি আমের জন্য সুবিধাই বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

একসময় রাজশাহীর আম বলতে শুধু জেলার বাঘা ও চারঘাটেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে এখন আমবাগানে বিস্তৃতি ঘটেছে জেলার সব উপজেলায়। এমনকি শহরেও বেড়েছে আমগাছ। সব মিলিয়ে এখন রাজশাহীর সর্বত্র হচ্ছে আমবাগান।

এদিকে আমগাছে কীটনাশক স্প্রে, গোড়ায় পানি দেওয়াসহ পুরোদমে সব রকমের পরিচর্যা চলছে। নগরীর হেতেম খাঁ, গৌরহাঙ্গা, লক্ষ্মীপুর, শিরোইল, কোর্ট স্টেশন, ভেড়িপাড়া, মালোপাড়া, কাশিয়াডাঙ্গা, মেহেরচণ্ডি ও পদ্মা আবাসিক এলাকায়সহ   জেলার বাঘা, চারঘাট, মোহনপুর ও বাগমারা এলাকায় দেখা মিলেছে আমের গুটি। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ আর সবুজ দানা জাদুর মতো কাছে টানছে আমপ্রেমীদের। আম গাছের মগডালেই নজর কাড়ছে পথচারীদের।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। আম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬ হাজার ১৫৬ মেট্রিক টন। এ বছর জেলায় আম চাষ হচ্ছে ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় আমের চাষাবাদ বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। কোনো ধরনের কেমিক্যালের প্রয়োগ ছাড়াই এবার গাছে গাছে সবল মুকুলে আমচাষিদের মুখে হাসি ফিরেছে। তারা প্রত্যাশা করছেন, মুকুলের সঙ্গে সঙ্গে এবার আমেরও বাম্পার ফলন হবে।

দুর্গাপুর উপজেলা আমচাষি সোহেল রানা বলেন, অনেক গাছে আমগুটি দেখা দিয়েছে। রোগবালাই থেকে বাঁচতে কীটনাশকসহ কিছু ওষুধ গাছে ছিটানো হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে আমের গুটি আসতে শুরু হবে।

দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, এ বছর উপজেলায় ১ হাজার ৩২ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা আম চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

বাঘা উপজেলার আম চাষি সাজেদুর রহমান বলেন, গত বছরও গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু সেগুলো টেকেনি। এ বছরও যাতে সেই রকম কিছু না নয় তাই শুরু থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি ও পরিচর্যা নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে বলে জানান তিনি।

ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে। ইতোমধ্যে সেসব মুকুল থেকে গুটি আমে রূপান্তরিত হচ্ছে। আর কয়েকদিন পর গাছের ডালে ডালে দৃশ্যমান হবে আম।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মোজদার হোসেন বলেন, “আমরা এবার অনেক ভালো ফলনের আশা করছি। মুকুল যেটা হয়েছে খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত আবহাওয়াও ভালো রয়েছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হবে, রোদ হবে। এখন পর্যন্ত খারাপ কিছুই লক্ষ্য করা যায়নি। জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।”

Link copied!