• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

এক স্কুলে পড়ে ১০ জোড়া যমজ ভাই-বোন


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩, ১০:০২ পিএম
এক স্কুলে পড়ে ১০ জোড়া যমজ ভাই-বোন

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে ১০ জোড়া যমজ ভাই-বোন একসঙ্গে লেখাপড়া করে। এক বিদ্যালয়ে এতগুলো যমজ ভাই-বোনের লেখাপড়ার বিষয়টি পুরো জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

উপজেলার মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলে এক সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন ২০ জন যমজ ভাই-বোন। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে তাহসিন-তাসনিম ও সান-মুন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে কার্তিক-গণেশ, হাবিব-হাফিজ ও সুমাইয়া-সাদিয়া, অষ্টম শ্রেণিতে শুভ-সৌরভ, নবম শ্রেণিতে হাসি-খুশি ও তাহবি-তাসবি এবং দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে আবিদ-অমিত ও রাহুল রাহা-চঞ্চল রাহা।

যমজ ভাই-বোনদের চেহারায় মিল থাকায় তাদের নিশ্চিত করতে খানিকটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষক ও সহপাঠীদের। তবে বিষয়টি বেশ উপভোগ করছেন তারা।

ষষ্ঠ শ্রেণির যমজ দুই ভাই সান ও মুন বলেন, “আমরা দুই ভাই একসঙ্গে সব কাজ করি। খাওয়া, খেলাধুলা ও স্কুলে আসা যাওয়া একসঙ্গে করি ৷ আমাদের দুজনের পছন্দ মাংস ভাত ৷ শুধু দুজনের দুই রঙ পছন্দ ৷ একজনের লাল আরেকজনের নীল ৷ আমরা একই পোশাক পরে বিভিন্ন জায়গায় যাই ৷ শুধু পোশাক না আমাদের জুতা, চশমা, প্যান্ট সব একরকম। আমাদের খুব ভালো লাগে৷ তবে অনেকে আমরা কে কোনটা তা চিনতে পারেনা। আমরা এ বিষয়টাকে আরও বেশি উপভোগ করি। আমরা দুই ভাই অনেক আনন্দ করি। বাড়িতে একসঙ্গে পড়তে বসি। আমাদের বাবা-মা ও পরিবার সকলে খুশি আমাদের নিয়ে।“

সপ্তম শ্রেণির যমজ দুই বোন সুমাইয়া ও সাদিয়া বলেন, “আমরা একসঙ্গে স্কুলে আসি। শ্রেণিকক্ষে একসঙ্গে বসি ৷ টিফিনের সময় আবার একসঙ্গে খেলাধুলা করি। ক্লাসের সময় একজনকে বকা দিলে আমাদের আরেকজনের খুব খারাপ লাগে ৷ স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাদের চিনতে পারে না ৷ তখন একসঙ্গে দুজনকে ডাকে তখন আমাদের খুব ভালো লাগে।  

নবম শ্রেণির যমজ দুই বোন হাসি ও খুশি বলেন, “আমাদের একটা বড় সুবিধা হল কেউ কোন ভুল করলে একজন আরেকজনকে চাপিয়ে দেওয়া যায় ৷ পরে আবার আমরা একসঙ্গে মিলে যাই ৷ আর পরিবারের কাছে, আত্মীয় স্বজনদের কাছে ও শিক্ষকদের কাছেও আমরা বেশ আদর পাই ৷ আমরা আমাদের পুরো সময়টা একসঙ্গে কাঁটাই। আমরা জমজ হয়ে অনেক খুশি৷”

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, “যমজ বিষয়টি আমি বেশ উপভোগ করি ৷ তারা যখন পাশাপাশি বসে তখন তাদের দেখতেও ভালো লাগে। তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি। তারা যাতে ভালো কিছু করে আমরা সবসময় তাদের উৎসাহিত করি ৷”

মামুনুর রশিদ নামের আরেক শিক্ষক বলেন, “আমাদের প্রত্যেকটি শ্রেণিতে যমজ শিক্ষার্থী আছে ৷ ক্লাস নেওয়ার সময় একজন পড়া দিতে পারলে অপরজন খুশি হয়। আবার একজন না পারলে অপরজন মন খারাপ করে ৷ তাদের দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে কে কোনটা ৷ সে কারণে একজনের নাম আরেকজনকে বলতে হয় ৷ তবে তারা বেশ মেধাবী ৷ আমরা আশা রাখছি তারা তাদের কর্মজীবনে ভালো কিছু করবে ৷”

মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে ২০ জন যমজ ভাই-বোন পড়াশোনা করে ৷ তাদের নামগুলো প্রায় একই রকম ও চেহারায়ও মিলও রয়েছে। সে কারণে কোনটা কে সেটা বুঝতে বিড়ম্বনায় পরতে হয়। তবুও আমরা যমজ বিষয়টি বেশ উপভোগ করছি ৷ এ ছাড়াও আমি লক্ষ্য করেছি তাদের মেধাও প্রায় সমান হয় ৷ একজনের শ্রেণির রোল নম্বর দুই হলে অপরজনের তিন হয়। তাদের আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছদ একই রকম ৷ তারা একসঙ্গে থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আর আমরাও বিষয়টি উপভোগ করি।”

Link copied!