ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি বিশ্বকাপ জেতানো অলরাউন্ডার মারলন স্যামুয়েলস দুর্নীতিবিরোধী চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টোয়েন্টি লিগের ঘটনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তারকার বিপক্ষে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রিকেট (ইসিবি) পক্ষে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গঠন করেছিল আইসিসি।
স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে যে চারটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল তার প্রত্যেকটিতে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। ট্র্যাইবুনালে স্যামুয়েলস আত্মপক্ষ সমর্থনের সকল সুযোগ পেয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর স্যামুয়েলসকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আইসিসি। এর ফলে দুর্নীতির দায়ে দ্বিতীয়বারের মতো শাস্তি পেতে যাচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০১২ ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো স্যামুয়েলস।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী আইনের ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৬ ও ২.৪.৭ নম্বর ধারা ভেঙেছেন এই ক্যারিবীয় তারকা। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টোয়েন্টি লিগে কর্নাটক টাস্কার্সের দলে থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলেননি এই অলরাউন্ডার।
ট্র্যাইবুনালের অধিকাংশ সদস্য একমত হয়েছেন যে, স্যামুয়েলস উল্লেখিত ২.৪.২ ধারা ভঙ্গের জন্য শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো রকমের অর্থ, উপহার, আতিথেয়তা বা অন্য সুবিধা নেওয়ার কথা স্বীকৃত দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে না জানানো মানে ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাকি তিনটি ধারায় ট্র্যাইবুনালের সকল সদস্য স্যামুয়েলসের অপরাধের বিষয়ে একমত। এর মধ্যে আছে ৭৫০ ডলার বা এর বেশি পরিমাণ অর্থ পাওয়ার তথ্য গোপন করা, তদন্তে স্বীকৃত কর্মকর্তাকে সাহায্য না করা ও তথ্য গোপন করে তদন্ত কার্যক্রম বিলম্বিত করা।
এর আগে ২০০৮ সালেও স্যামুয়েলস এমন অপরাধে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের ওয়ানডে ম্যাচের তথ্য বাইরে পাচার করতে গিয়ে পুলিশের টোপে ধরা পড়েন তিনি। সে সময় বোর্ড তার পাশে দাঁড়ানোয় বিশ্বকাপেও খেলার সুযোগ পান স্যামুয়েলস। তবে পরে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।
এরপর ফিরে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন স্যামুয়েলস। তবে ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে যখন ফের অভিযোগ ওঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট বোর্ড আর তার পক্ষে দাঁড়ায়নি। বরং এক বিবৃতিতে তারা এমন কর্মকাণ্ডকে ধিক্কার জানায়। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্তে আইসিসি ও ইসিবিকে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাসও দেয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে স ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৪৫টি ম্যাচ খেলা স্যামুয়েলস ২০২০ সালে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসরে যান।