বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড জয়রথ ছুটছেই। আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবারের আসরে প্রথম অঘটন ঘটানো আফগানিস্তানকে ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৮৯ রানের জবাবে আফগানরা গুটিয়ে যায় ৩৪.৪ ওভারে ১৩৯ রানে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন গ্লেন ফিলিপস।
চেন্নাইয়ে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক। কারণ উইকেটের সুবিধা নেওয়া এবং দ্রুত নিউজিল্যান্ড উইকেট তুলে নেওয়া। বল হাতে শুরুটাও দারুণ করে ফজল হক ফরুকী-মুজিব উর রহমানরা। ষষ্ঠ ওভারে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ডেভন কনওয়েকে সাজঘরে ফেরত পাঠান মুজিব উর রহমান। কিউইদের রান উঠছিল তখন ওভারপ্রতি ৫ করে।
এরপর অবশ্য লম্বা সময় ক্রিজে রাজত্ব করেছিলেন উইল ইয়াং এবং রাচিন রবীন্দ্র। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৭৯ রান। এই জুটি আরও আগেই ভাঙ্গতে পারতো, যদি রাচিনের ক্যাচটা ঠিকভাবে লুফে নিতে পারতেন হাশমতউল্লাহ শহিদি।
এরপর আচমকাই ম্যাচের দৃশ্যপট নিজেদের করে নেন আফগান বোলাররা। আজমতউল্লাহ ওমরজাই এর জোড়া আঘাতে ফিরে যান দুই সেট ব্যাটার। ড্যারেল মিচেলকে ফেরান রশিদ খান। ১ রান তুলতেই নিউজিল্যান্ডরা হারায় তিন উইকেট। ১০৯ রানে ১ উইকেট থেকে ১১০ রানেই হয়ে যায় ৩ উইকেট। রাচিন ৩২ ও ইয়াং করেন ৫৪ রান। আর মিচেলের উইলো থেকে আসে ১ রান।
সেখান থেকে বিপর্যয় সামাল দেন নেতৃত্বভার পাওয়া টম ল্যাথাম ও গ্লেন ফিলিপস। তারা ১৪৫ রানের জুটি গড়েন। তাদের এই জুটি বড় করার জন্য আফগান ফিল্ডারদের অবদান অনেক বেশি। মুজিব-উর রহমান এবং হাশমতউল্লাহ শহিদি দুজনেই ক্যাচ ছেড়েছেন।
নাভিন উল হকের করা ৪৮ তম ওভারে মারতে গিয়ে দুজনেই আউট হয়েছেন। আউট হওয়ার আগে ফিলিপস খেলেন ৮০ বলে ৭১ রানের ইনিংস আর লাথামের ইনিংসটি থামে ৭৪ বলে ৬৮ রানে। তবে তাতে রান তোলায় ভাটা পড়েনি। মার্ক চ্যাপম্যানের ১২ বলে ২৫ রানের ক্যামিওতে ভর করে ঠিকই ২৮৮ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। আফগানিস্তানের পক্ষে দুইটি করে উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই এবং নাভিন উল হক।
২৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে আফগানিস্তান। কিউই বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে থাকে আফগানিস্তান ব্যাটসম্যানরা। ২৭ রানের ভিতর বিদায় দুই ওপেনারের। ১১ রান করা রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট তুলে নেন ম্যাট হেনরি আর ১৪ রান করা ইব্রাহিম জাদরান শিকার হন ট্রেন্ট বোল্টের।
অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিও উইকেটে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ৪৩ রানে ফিরে যান তিনি ৮ রান করে। এরপর রহমত শাহ এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই চেষ্টা করেছিলেন ইনিংস মেরামতের। দুজন মিলে করেছেন ৫৪ রানের জুটি। তাদের বিচ্ছিন্ন করেন বোল্ট। ৯৭ রানে ফিরে যান ২৭ রান করা ওমরজাই।
এরপরই শেষ হয়ে যায় আফগান প্রতিরোধ। বাকি ব্যাটসম্যানরা ছিল আসা যাওয়ার মিছিলে। শেষ ছয় ব্যাটসম্যান মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪২ রান। শেষ পাঁচ ব্যাটারের ভিতর কেউ দেখেননি দুই অঙ্কের স্কোর। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন রহমত শাহ। আফগানদের ইনিংসটাও গুটিয়ে যায় ১৩৯ রানে। ব্ল্যাকক্যাপসদের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার ও লকি ফার্গুসন।