• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ম্যারাডোনার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৩, ০৫:১২ পিএম
ম্যারাডোনার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
ম্যারাডোনার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ফাইল ছবি

আজ (শনিবার) ২৫ নভেম্বর, বিশ্ব ফুটবলের এক নক্ষত্রের চলে যাওয়ার দিন। ২০২০ সালের এই দিনে কোটি কোটি ফুটবল ভক্তকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে যান ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আজ এই কিংবদন্তির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। গোটা বিশ্বের অগণিত দর্শক শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছেন ফুটবলের রাজপুত্রকে। 

পুরো নাম ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা। জন্ম হয়েছিল ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর, আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের অদূরে লানুস শহরে। আট ভাইবোনের মধ্যে ম্যরাডোনা ছিলেন পঞ্চম। ছোটবেলা কেটেছে অত্যন্ত দারিদ্রের মধ্যে।

শৈশব থেকেই ম্যারাডোনার ফুটবল খেলার শখ ছিল। ১০ বছর বয়সেই তার ফুটবল শৈল্পিক নজর কাড়ে সবার। এরপরই বুয়েনস আইরেসের বিখ্যাত ক্লাব আর্জেন্তিনোস জুনিয়র্সে সুযোগ পান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পা রাখেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে। ১৯৭৭ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

ম্যারাডোনার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ফাইল ছবি

ছোট দৈহিক গড়নের ছেলেটি ১৯৭৯ সালে জাপানে নিজ দেশের হয়ে অনন্য এক অর্জন বয়ে আনে। ১৯ বছর বয়সেই আর্জেন্টিনার হয়ে যুব বিশ্বকাপ জিতেন তিনি। যেখানে আসরের সেরা খেলোয়াড় গোল্ডেন বল পুরস্কার জিতেন তিনি। সেবারই তার দেশ বুঝে গিয়েছিল ফুটবলের স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে আসছেন নয়া এক তারকা।

সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই ফুটবলারের অধিনায়কত্বে আর্জেন্টিনা ১৯৮৬‍‍`র ফুটবল বিশ্বকাপ জেতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি তার বিখ্যাত ‘হাত দিয়ে গোল’টি করেন, যেটি ‘হ্যান্ড অফ গড’ নামে পরিচিতি লাভ করে।

১৯৯০ সালে আর্জেন্টিনা যখন বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে তখন দলকে নেতৃত্ব দেন ম্যারাডোনা। ইতালিতে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে শেষদিকে পেনাল্টি গোলে পশ্চিম জার্মানির কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয় আলবিসেলেস্তেদের। এরপর ১৯৯৪ সালে তিনি আবার আমেরিকায় আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কত্ব করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অবৈধ মাদক পরীক্ষায় ফেল করার কারণে তাকে আর্জেন্টিনা ফিরে যেতে হয়।

আর্জেন্টিনার ম্যারাডোনা ইতালির ক্লাব নাপোলিতেও রেখেছিলেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। ১৯৮৪ সালে ২৪ বছর বয়সে ম্যারাডোনা যোগ দেন দক্ষিণ ইতালির দল নাপোলিতে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সাল, এ ৭ বছর তিনি ক্লাবটির হয়ে দারুণ সময় পার করেন। ক্লাব ফুটবলের উজ্জ্বল নক্ষত্র ম্যারাডোনা, তার একক নৈপুণ্যে অখ্যাত নাপোলি ঘরে তোলেন ইউরোপ দ্বিতীয় সেরা ট্রফি ইউরোপা লিগ এবং সেই সঙ্গে দুই দুইবার হাত উঁচিয়ে ধরেন ইতালীয় ‍‍`সিরি আ‍‍` ট্রফিও। 

ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত ম্যারাডোনা নাপোলিকে উজাড় করে দিয়েছেন, সেই সঙ্গে নাপোলিও তাকে চিরদিন মনে রাখার জন্য তার গায়ে জড়ানো ১০ নাম্বার জার্সি কাউকে কখনও দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মৃত্যুর পর নাপোলির ‍‍`সাম পাওলো‍‍` স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‍‍`ডিয়েগো আরমান্দো  ম্যারাডোনা স্টেডিয়াম‍‍`।  

ক্যারিয়ারের শেষদিকে ম্যারাডোনা মাদকে আসক্তি নিয়ে সমস্যায় ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে তার শরীরের মাদকের উপস্থিতি ধরা পড়লে তাকে ১৫ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। তার ৩৭তম জন্মদিনে ১৯৯৭ সালে তিনি পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নেন। সেসময় তিনি আর্জেন্টিনার বড়দল বোকা জুনিয়ার্সে খেলছিলেন। ম্যারাডোনাকে গত ৫০ বছরে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকাদের একজন বলে গণ্য করা হয়। বার্সেলোনা এবং নাপোলির মতো ক্লাবেও খেলেছেন। আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১টি ম্যাচে তিনি ৩৪টি গোল করেন। আলবিসেলেস্তেদের হয়ে খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষে আরও একবার আর্জেন্টিনার হাল ধরেছিলেন ম্যারাডোনাকে। দেশের শিরোপা খরা ঘোচাতে ২০০৮ সালে ম্যারাডোনার কাঁধে জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু কোচ হিসেবে সফল হতে পারেননি। ২০১০ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হেরে আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয়। ব্যর্থ বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার কোচের পদ থেকে অবসর নেন ম্যারাডোনা।

বিশ্ব ফুটবলের ঈশ্বর ম্যারাডোনা ৬০ বছর বয়সে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন তিনি। তিনি চলে গেলেও আজও ফুটবল ভক্তরা স্মরণ করে যান তাকে। 

খেলা বিভাগের আরো খবর

Link copied!