বিশ্বকাপে টিকে থাকার ম্যাচে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৫৩ রান তুলে টাইগাররা। সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য ওমানের বিপক্ষে অবশ্যই জিততে হবে বাংলাদেশকে।
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের বাঁচা-মরার ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগের ম্যাচের থেকে একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। গত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ধীরগতির শুরু পায় বাংলাদেশ।
টাইগারদের হয়ে ব্যাটিংয়ে উদ্ধোধন করতে নামেন লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। আগের ম্যাচের মতো আজও ব্যর্থ টাইগারদের ওপেনিং জুটি। প্রথমদিকে রান তুলতে ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশের ওপেনাররা। প্রথম ওভারে দুই ওয়াইডের সঙ্গে মাত্র তিন, দ্বিতীয় ওভারে ওঠে মাত্র ৪ রান। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারে রিভিও নিয়ে বেঁচে যান লিটন।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই পঞ্চম বলে বিলাল খানের বলে এলবিডব্লিও হন লিটন দাস। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ৬ রান। রানের চাকা সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে একটি করে চার ও ছয়ে ১০ রান তুলে নেন নাঈম।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে যেখানে নিচের দিকে ব্যাট করেছেন শেখ মেহেদী হাসান। সেখানে আজ তাকে পাঠানো হয় তিন নম্বরে। কিন্তু হতাশ করেছেন তিনি। চার বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই ফায়াজ বাটের কট এন্ড বোলে পরিণত হন তিনি।
এরপর সাকিব ও নাঈম মিলে এগুতে থাকেন। ওমানের বোলাররা যথেষ্ট চতুরতার সঙ্গে বল করছিলেন। রানের চাকা সচল রাখতে সিঙ্গেলের উপর ভরষা রাখে টাইগাররা। ইনিংসের সপ্তম ওভারে একটি ছয়ে ১২ রান তুলে বাংলাদেশ।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে মিড উইকেটে প্রজাপাতির হাতে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান নাঈম। অবশ্য শটে যে জোর ছিল তাতে হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ারই কথা। এরপর সাকিব-নাঈম মিলে প্রতি ওভারেই একটি করে বাউন্ডারি মারতে থাকেন। প্রতি ওভারেই আট-দশের মতো রান তুলতে থাকেন তারা।
ইনিংসের ১১তম ওভার থেকেই বোলারদের উপর চড়াও হতে থাকে সাকিব-নাঈম। ১২তম ওভারে নাদিমের বলে টানা দুইটি চার মারেন সাকিব। এ ওভারেই মিড উইকেটের উপর দিয়ে দুর্দান্ত ছয় মারেন নাঈম।
সাকিব-নাঈমের ৫৩ বলে ৮০ রানের জুটি ভাঙ্গে আকিব ইলিয়াসের দুর্দান্ত এক থ্রোয়ে। ছয়টি চারে ২৯ বলে ৪২ রান করেন সাকিব। এ ম্যাচেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট ও সবচেয়ে বেশি ছয়ের রেকর্ড গড়েন সাকিব।
একপাশ ধরে রেখে খেলতে থাকেন নাঈম শেখ। তিনটি ছয় ও তিনটি চারে ফিফটি তুলে নেন নাঈম শেখ। ৪৩ বলে অর্ধশত রান করেন তিনি। নূরুল হাসান সোহান নেমে ৪ বলে তিন রান করে লং অফে ধরা পড়েন সন্দীপ গৌড়ের হাতে।
১৭তম ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন কালিমুল্লাহ। ৫ বলে ১ রান করে এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েন আফিফ। আর দুর্দান্ত খেলতে থাকা নাঈম ধরা পড়েন মিড উইকেটে। চারটি ছয় ও তিনটি চারের মাধ্যমে ৫০ বলে ৬৪ রান করেন তিনি।
এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে রানের চাকা সচল রাখতে থাকেন। উইকেটে এসে প্রথম বলেই চার মারেন অধিনায়ক। অবশ্য পরের ওভারে স্কয়ার লেগ দিয়ে দুর্দান্ত ছয় মারেন তিনি।
২০১৬ সালের পর টি-টোয়েন্টিতে আট নম্বরে ব্যাট করতে নামেন মুশফিক। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। চার বলে ৬ রান করে উইকেট কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। লং অফে ক্যাচ দিয়ে প্রথম বলেই আউট হন সাইফউদ্দীন।
শেষের দিকে মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ১১ বলে ১৭ রানে নির্ধারিত ২০ ওভার সব উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান তুলে বাংলাদেশ।
ওমানের ফায়াজ বাট ও বিলাল খান নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। কালিমুল্লাহর শিকার দুই উইকেট। এছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন জিশান মাকসুদ।