• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

‘জনগণকে কষ্ট দেওয়া কর্মসূচি মেনে নেওয়ার মতো নয়’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
‘জনগণকে কষ্ট দেওয়া কর্মসূচি মেনে নেওয়ার মতো নয়’

খিলক্ষেত এলাকার বাসিন্দা অমর কান্তি আচার্য। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খিলক্ষেত বাস স্টপেজে এসে দেখেন যানজট আর রাজনৈতিক দলের মিছিল। তিনি জানান, তাকে ২টার মধ্যে কালিয়াকৈর যেতে হবে। অন্যান্য দিন যানজট হলেও থেমে থেমে চলত গাড়ি। কিন্তু আজ গাড়ি চলার জো নেই। সকাল থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত স্টপেজে বসে আছেন তিনি।

বুধবার (১৯ জুলাই) অমর কান্তির সঙ্গে কথা হয় খিলক্ষেত বাসস্টপেজে। ভোগান্তির অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমি গুরুত্বপূর্ণ কাজে বেরিয়ে বসে আছি। আজ যেতে পারব বলে মনে হয় না। আমি মনে করি, দুই গ্রুপ মিলে তাদের সমাধানে বসা উচিত। তাদের কর্মসূচির জন্য জনগণের ভোগান্তি পোহাতে হবে কেন?”

শুধু অমর কান্তি নয়। তার মত অনেকেই দেশের দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ আর কর্মসূচীতে ভোগান্তিতে পড়েছে। পাশাপাশি যানবাহন চালকদের আয় কমেছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে অভিযোগও করছেন কেউ কেউ।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের কাছে এমন কিছু প্রত্যাশা করেন না তারা।

বুধবার (১৯ জুলাই) দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীতে।

এদিন দুপুর সোয়া ১টায় খিলক্ষেত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাসস্টপেজ থেকে ফ্লাইওভারে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দেখা যায় যানজট।

রাস্তার ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশি। ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলগুলো মালিবাগ যেতে ব্যবহার করছে রাজধানীর লিংক রোড। তেঁজগাও এলাকাতেও যানজটের চিত্র চোখে পড়ে। 

জসিম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। রাজধানীর নবাবগঞ্জে দিতে যাবেন ফরমায়েশকৃত ওষুধ। তিনি বলেন, “প্রায় দেড় ঘণ্টা থেকে বসে আছি। অনেকগুলো ওষুধ আছে। ওষুধ তো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কিন্তু উপায় নাই। গাড়ি পাচ্ছি না তাই বসে আছি। আমার যেতেই সময় লাগবে তিন ঘণ্টা। দেড় ঘণ্টা থেকে বসে আছি। জানি না কখন গাড়ি পাব।”

আব্দুল আল মামুন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “নিকুঞ্জ-২ থেকে হাঁটতে শুরু করছি। যানবাহন সব আটকানো। হাঁটতে হাঁটতে প্রায় ১ কিলোমিটার হাঁটছি। আমি যাব বসুন্ধরা পর্যন্ত। কলেজ থেকে ফিরে আবার যাব পড়াতে। জানতে পারলাম ঢাকায় সমাবেশ হচ্ছে। এজন্য যানবাহন আটকানো। এভাবে যদি সারাদিন চলে তবে তো আমার কষ্ট হবে। কেননা, আমরা ছাত্র মানুষ। যদি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে যাতায়াত করি। তবে আমি পোষাতে পারব না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে এমন পরিস্থিতি কখনোই প্রত্যাশা করি না। জনগণের সেবার জন্যই রাষ্ট্র এবং সরকার। তারা যদি জনগণকে কষ্ট দেয় তবে গণতন্ত্রটা কোথায়? ”

কাজী মিরাজ নামে এক বাস যাত্রী বলেন, “আমি ১১ টার দিকে কামাড় পাড়ায় উঠছি। তারপরে সুইচ গেটে নেমে, পায়ে হেঁটে আব্দুল্লাহপুরে এসে বাস ধরছি। দুপুর ২টা বাজে নতুন বাজারে এখনো বাসে বসে আছি। আমি উত্তরাতেই ছিলাম প্রায় দুই ঘণ্টা। এখন আড়াইটা বাজে। কখন যে যাব বুঝতে পারছি না। তাদের কর্মসূচির জন্য এমন দুর্ভোগ। জনগণকে কষ্ট দিয়ে যদি তাদের কর্মসূচি সফল করতে হয়, তবে এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়।”

Link copied!