জনপ্রিয় খল অভিনেতা ও বর্তমানে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সেক্রেটারি মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে ‘অশিক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সরি টু সে, আমাকে বলতে হচ্ছে- শিল্পী সমিতিতে এমন একজন সেক্রেটারি পদে এসেছেন, যার কোনো শিক্ষা নেই। এটা ২০২৪ সাল। আমরা ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে আছি। এটা অশিক্ষিত লোকদের জায়গা না, এটা আনকালচারদের জায়গা না। এটা কাজ করে দেখিয়ে দেওয়া লোকদের জায়গা।’
এরপর নিপুণ বলেন, ‘শুধু কাজ করলেই হবে না। জ্ঞান থাকতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে। আমি একজন গ্রাজুয়েট। আমার তিন প্রজন্ম গ্রাজুয়েট।’
নিপুণ দাবি করেন, তাকে এমনটা বলতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাকে আজকে এমনটা বলতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা তাদের সম্মান দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম তারা সেই সম্মান রাখেনি। সম্মান রাখার যোগ্য তারা নয়। তাদের এখন আইনগতভাবেই মোকাবেলা করা হবে।’
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়েছিলেন তিনি। যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল।
গত ১৯ এপ্রিল নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ডিপজল পান ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে হেরে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ। এই নায়িকা পান ২০৯ ভোট।
নির্বাচনের পরপরই জয়ী প্রার্থীদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন নিপুণ। এমনকি সেসময় ডিপজলের প্রশংসায় মেতে ওঠেন তিনি। এই নায়িকা বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে হারবো, এমনটা কল্পনাও করিনি। আমি ভেবেছিলাম ডিপজল সাহেবের সঙ্গে আমি যখন দাঁড়াবো, খুব বেশি হলে ৫০টা ভোট পাবো।’
তবে নির্বাচনের মাসখানেক বাদেই ডিপজলকে নিয়ে নতুন সুর দেখা গেল নিপুণের কণ্ঠে। বুধবার (১৫ মে) আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন নিপুণ। যেখানে নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনসহ নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মিশা-ডিপজলের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
হঠাৎই কেন নিপুণের এই বদল? সে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি। যেখানে এই অভিনেত্রী বলেছেন, রিট আরও আগেই করা উচিত ছিল। ভোট হয়েছে শুক্রবার। ভোটের ফলাফল এসেছে শনিবার সকালে। রোববারই রিটটি করা দরকার ছিল। কিন্তু আমি অসুস্থ হয়ে পড়া এবং জরুরি কাজে যুক্তরাজ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আমি আসার সময় সবকিছু প্রসেস করে রেখে এসেছিলাম। গত মঙ্গলবার আমার আইনজীবীর মাধ্যমে রিটটি করেছি।’
ভোটে বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেন তেমনটা করেছিলেন, জানতে চাইলে নিপুণ বলেন, ‘যেহেতু আমি ভোটের ফলাফল পর্যন্ত ছিলাম। তা ছাড়া ওই সময় সেটি করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তা ছাড়া মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, আপিল বোর্ডের যোগসাজশে ভেতরে-ভেতরে এত বড় অনিয়ম চলে আসছিল, সেটি ফলাফল প্রকাশের অনেক সময় পর স্পষ্ট হয়েছে।’
গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচন। এতে সভাপতি পদে মিশা ২৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহমুদ কলি ১৭০ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট। ১৬ ভোট কম পেয়ে হেরে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিপুণ। তিনি পেয়েছেন ২০৯ ভোট।