উন্নত দেশের মতো আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, “ইমার্জেন্সি রেসপন্স কন্ট্রোল সেন্টার (ইআরসিসি) প্রজেক্টের আওতায় তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আগের চাইতে দ্রুততম করা সম্ভব হবে।”
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স কন্ট্রোল সেন্টার (ইআরসিসি)’ প্রজেক্ট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “আমরা ফায়ার সার্ভিসের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবার সক্ষমতা বাড়িয়েছি। ২০০৯ সালে মাত্র ৫০টি অ্যাম্বুলেন্স ছিল, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৯৫টি। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী প্রতিটি ফায়ার স্টেশনে পর্যায়ক্রমে ন্যূনতম একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার লক্ষ্যে ৩৫৭টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ফায়ার সার্ভিস এখন সকল দুর্যোগে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা নিয়ে দ্রুত মানুষের পাশে ছুটে যাওয়ার মতো একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাহিনী। একদিকে প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান উন্নত হয়েছে, অপরদিকে প্রতিষ্ঠানটির সেবার ক্ষেত্রও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রান্তিক মানুষ তার সেবা পাচ্ছে।”
ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “নতুন ইআরসিসি ভবনের প্রযুক্তিগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফায়ার সার্ভিস মানুষের আরও আস্থাভাজন হয়ে উঠবে। দুর্যোগ-দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ, বিপদগ্রস্ত মানুষকে সেবা প্রদান, প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত সাড়া প্রদানের মাধ্যমে আপনারা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।”
অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সারা দেশে চালু ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা (৫০৩টি, যা ২০০৯ সালের আগে ছিল মাত্র ২০৪টি।) আমরা আশা করছি, অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে নির্মাণসম্পন্ন আরও ৪৩টি ফায়ার স্টেশনের শুভ উদ্বোধন করবেন।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “সব দুর্যোগে প্রথম সাড়াদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি বহুমাত্রিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নিয়োজিত। আগুন থেকে শুরু করে ভূমিকম্প; সব দুর্যোগেই সবার আগে আসে ফায়ার সার্ভিস। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সব উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ চলছে। কিছুদিন আগে এই বাহিনীতে বিশ্বের সর্বাধিক ৬৮ মিটার উচ্চতার টার্নটেবল লেডার গাড়ি যোগ হয়েছে। রিমোট কন্ট্রোল ফায়ারফাইটিং ভেহিক্যাল সংযোজিত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক, কইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কিম তাইইয়াং ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (ফায়ার উইং) শাহানারা খাতুন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।