• ঢাকা
  • বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৯ জ্বিলকদ ১৪৪৬

বয়সের ব্যবধান বেশি হলে কি সম্পর্ক সুখের হয়?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
বয়সের ব্যবধান বেশি হলে কি সম্পর্ক সুখের হয়?
ছবি: সংগৃহীত

সম্পর্ক মানেই পারস্পরিক বোঝাপড়া, বিশ্বাস, সম্মান এবং ভালোবাসা। কিন্তু যখন কোনো সম্পর্কের অংশীদারদের বয়সের ব্যবধান বেশি হয়, যেমন ৮, ১০ কিংবা তার বেশি বছর, তখনই প্রশ্ন উঠে এমন সম্পর্ক কি টিকে থাকে? সুখী হয়? এই প্রশ্নের উত্তর একরেখায় দেওয়া কঠিন, কারণ সম্পর্কের স্থায়িত্ব বা সুখ নির্ভর করে বহু বিষয়ের উপর, বয়স তার মধ্যে একটি মাত্র।

বয়সের ব্যবধান—কেন ঘটে?
অনেক সময় একজন ব্যক্তি এমন কাউকে ভালোবাসেন যিনি বয়সে অনেক বড় বা ছোট। এটি হতে পারে ব্যক্তিত্ব, অভিজ্ঞতা, মানসিক পরিপক্বতা, অথবা নিরাপত্তা ও নির্ভরতার আকর্ষণের কারণে। অনেকে আবার বয়সের ব্যবধান সম্পর্কে এক ধরনের রোমান্টিকতা বা “বিভিন্নতা” অনুভব করেন।

বয়সের ব্যবধান বেশি হলে সম্পর্কের সুবিধা

পরিপক্বতা ও সহনশীলতা
বয়সে বড় ব্যক্তি সাধারণত মানসিকভাবে পরিণত হন, ফলে সম্পর্কের ছোটখাটো সমস্যায় তারা ধৈর্য ধরেন। তারা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জীবনকে বুঝেছেন, যা সম্পর্কের জটিলতা সামাল দিতে সাহায্য করে।

নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা
বয়সে বড় ব্যক্তি আর্থিকভাবে, পেশাগতভাবে বা মানসিকভাবে অধিক স্থিতিশীল হতে পারেন। এর ফলে প্রিয়জন একধরনের নিরাপত্তা অনুভব করেন, যা সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়ায়।

সহানুভূতি ও যত্ন
বয়সে বড় অংশীদার অনেক সময় শিশুর মতো যত্ন নেন এবং পরামর্শ দেন। এতে ছোট পক্ষটি ভালোবাসা ও গুরুত্ব অনুভব করে, যা সম্পর্ককে উষ্ণ করে তোলে।

পরস্পরের থেকে শেখার সুযোগ
বয়সের ব্যবধান মানেই একে অপরের জীবনের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। এতে নতুন কিছু শেখার ও বোঝার সুযোগ তৈরি হয়, যা সম্পর্ককে গভীর করে তোলে।

বয়সের ব্যবধান বেশি হওয়ার চ্যালেঞ্জ

জন্মগত পার্থক্য ও মূল্যবোধে ভিন্নতা

বয়সের ব্যবধান থাকলে একে অপরের সময়, সংস্কৃতি ও চিন্তার ধরণে ফারাক থাকে। এক পক্ষ ডিজিটাল যুগে বড় হয়েছে, অন্য পক্ষ চিঠি বা রেডিওর যুগে—এতে কখনো কখনো মতের অমিল দেখা দেয়।

শারীরিক চাহিদা ও স্বাস্থ্যগত ফারাক

বয়সের ব্যবধান অনেক হলে শরীর ও মানসিক শক্তিতে ফারাক তৈরি হয়। যৌন চাহিদা, শারীরিক গতিশীলতা বা জীবনযাপনের রুটিনেও দ্বন্দ্ব হতে পারে।

সামাজিক চাপ ও মন্তব্য
এ ধরনের সম্পর্ক প্রায়ই সামাজিকভাবে সমালোচনার শিকার হয়।“অর্থের লোভে সম্পর্ক”তৈরি হয়েছে —এমন মন্তব্য মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় দ্বন্দ্ব
একজন হয়তো জীবনের শুরুতে, আরেকজন হয়তো অবসরের পথে—তাদের চাহিদা ও পরিকল্পনায় পার্থক্য দেখা দিতে পারে। সন্তান নেওয়া, ক্যারিয়ার গঠন কিংবা ভ্রমণের ইচ্ছাতেও থাকতে পারে ব্যবধান।

কীভাবে সম্পর্ক সুখের হবে

বয়সের ব্যবধান যতই থাকুক না কেন, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে যা জরুরি পারস্পরিক সম্মান ও সমঝোতা, উন্মুক্ত যোগাযোগ, একসাথে সময় কাটানো ও অভ্যাসে মানিয়ে নেওয়া, সামাজিক চাপ উপেক্ষা করে একে অপরকে প্রাধান্য দেওয়া এবং পরস্পরের চাহিদা ও সীমাবদ্ধতা মেনে চলা। তবেই সুন্দর হবে সম্পর্ক।

Link copied!